যেকোনো সময় রাশিয়ার হামলার ভয়ে বিদেশিদের মধ্যে ইউক্রেন ছাড়ার হিড়িক শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ সাতটি দেশ নিজেদের নাগরিকদের দ্রুত ইউক্রেন ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, নেদারল্যান্ডস, লাটভিয়া, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড নাগরিকদের ইউক্রেন ছাড়তে বলেছে।
এদিকে, যেকোনো মুহূর্তে রাশিয়া হামলা চালাতে পারে- যুক্তরাষ্ট্রের এমন সতর্কতার পর দেশটির নাগরিকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন সরকার। শনিবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানোর পাশাপাশি হামলার বিষয়ে কোনো ধরনের আতঙ্ক না ছড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই মুহূর্তে শান্ত থাকা খুব জরুরি৷ প্রয়োজন দেশের ভেতরে একতা তৈরি এবং অস্থিতিশীলতা ও আতঙ্ক ছড়ায় এমন কাজ এড়িয়ে চলা৷’
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশ ইতিমধ্যে সারা বিশ্বজুড়েই উদ্বেগ তৈরি করেছে।
নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনে নিউজিল্যান্ডের কূটনৈতিক প্রতিনিধি নেই। তাই সেখানে নিউজিল্যান্ডের কূটনৈতিক সহায়তা প্রদানের সরকারের ক্ষমতা খুবই সীমিত। ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে নিউজিল্যান্ডের নাগরিকদের সরকারের সরিয়ে নেওয়ার ওপর নির্ভর করা উচিত হবে না।
শুক্রবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইউক্রেনে ব্রিটিশ নাগরিকদের এখনই চলে আসা উচিত।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাক্সার টেকনোলজিসের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, ক্রিমিয়া, রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চল ও বেলারুশের বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে রুশ সেনা মোতায়েন হতে দেখা গেছে।
রাশিয়া যে কোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে সামরিক হামলা চালাতে পারে – এই সতর্কতা জারির পরদিনই আমেরিকা কিয়েভে তাদের দূতাবাসের কর্মীদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে।
শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কিয়েভের দূতাবাস থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে বলে, ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, কিয়েভ থেকে দূতাবাস কর্মীদের সরিয়ে পোল্যান্ড সীমান্তের কাছাকাছি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, রাশিয়া বার বার বলেছে ইউক্রেন সামরিক হামলা চালানোর কোনো ইচ্ছা তাদের নেই। কিন্তু ইউক্রেন থেকে তাদের কূটনীতিকদের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন ইউক্রেন সরকার এবং তৃতীয় কোনো রাষ্ট্রের সম্ভাব্য উসকানির কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তবে তিনি বলেন রুশ দূতাবাস এবং কনস্যুলেটগুলো খোলা থাকবে।
পুতিনকে ফোন করবেন বাইডেন
আমেরিকার কাছ থেকে এই সতর্কতা এমন সময় জারি করা হচ্ছে যখন যুদ্ধ এড়াতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গেছে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ আলাদাভাবে টেলিফোনে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে কথা বলবেন।