দেশের পুরুষদের যে ক্যানসার সবচেয়ে বেশি হয়

১. কোলন ও পায়ুপথের ক্যানসার
এ ক্যানসার পুরুষদের বেশি হয়। আর রক্ষণশীল মানসিকতার কারণে নারীদের অনেক দেরিতে শনাক্ত হয়।কোলন বা বৃহদন্ত্রের ক্যানসার দীর্ঘদিন কোনো উপসর্গ ছাড়াও থাকতে পারে। তবে ওজন হ্রাস, খাবারে অরুচি, ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া বা রক্তশূন্যতা, কালো আলকাতরার মতো মলত্যাগ, আকস্মিক দেখা দেওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য, মলত্যাগের অভ্যাসের আকস্মিক পরিবর্তন হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
আবার যদি কারও পায়ুপথে তাজা না গিয়ে মরা রক্ত, আমযুক্ত রক্ত, পেটে মোচড় দিয়ে পায়খানা হয়, তবে সতর্ক হতে হবে।

জেনে নিন
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। আঁশযুক্ত খাবার, তাজা ফলমূল, শাকসবজি খান। রেড মিট বা লাল মাংস কম খান।

ধূমপান পরিহার করুন।

পরিবারে কোলন ক্যানসারের ইতিহাস থাকলে সচেতন হোন। সে ক্ষেত্রে স্ক্রিনিং কোলোনোস্কপির কথা বলা হয়।

কোনো উপসর্গ ছাড়াও কেবল স্ক্রিনিংয়ের আওতায় চিকিৎসক আপনাকে কোলোনোস্কপির উপদেশ দিতে পারেন। ৪০ বছরের পর সাধারণত এই স্ক্রিনিং করা হয়।

পায়ুপথে ব্যথা, পাইলস, রক্তপাত, মিউকাস যাওয়া যেকোনো সমস্যায় সংকোচ ভেঙে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। অভিজ্ঞ চিকিৎসক পায়ুপথে আঙুল দিয়ে পরীক্ষা বা ডিআরই করেই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারেন।

বিজ্ঞাপন
২. খাদ্যনালির ক্যানসার
বাংলাদেশে পুরুষদের সবচেয়ে বেশি হয় খাদ্যনালির ক্যানসার। খাদ্যনালির ক্যানসারের অনেক কারণের মধ্যে খাদ্যে ভেজাল, খাদ্যে ক্ষতিকর রঙের ব্যবহার, ফরমালিন, শস্যে অতিরিক্ত ডিডিটি ব্যবহার, আর্সেনিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ইত্যাদি অন্যতম। এ ছাড়া ধূমপান, তামাক, গুল, জর্দা ইত্যাদি ফুসফুস এবং মুখগহ্বর ক্যানসারের সঙ্গে খাদ্যনালির ক্যানসারের ব্যাপক যোগ আছে।
স্থূলতা ও অন্যান্য কারণে খাওয়ার পর অনেকের খাদ্য পাকস্থলী থেকে উল্টো পথে খাদ্যনালিতে উঠে আসে। একে বলে রিফ্লাক্স ইসোফেজাইটিস। ক্রমাগত অম্লযুক্ত এ খাবারের সংস্পর্শে আসার ফলে খাদ্যনালির কোষগুলোতে পরিবর্তন ঘটে। ফলে পরবর্তী সময়ে খাদ্যনালির ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। এ রোগ যদি এন্ডোস্কপি দিয়ে স্ক্রিনিং করা যায়, তাহলে ক্যানসারে আক্রান্তের বিষয়টি অনেক আগেই নির্ণয় করা সম্ভব।

জেনে নিন
খাবার বা পানি গিলতে সমস্যা, ওজন হ্রাস, খাবার আটকে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে সতর্ক হোন।
দীর্ঘ মেয়াদে বুক জ্বলা, গ্যাসট্রিক বা অ্যাসিডিটি, রিফ্লাক্স থাকলে কেবল নিজে নিজে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ না খেয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।
লেখক: অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মহাখালী, ঢাকা

Leave a Comment