‘আমার স্বামী বিদেশে থাকেন। বাড়িতে আমি আমার তিন সন্তান নিয়ে থাকি। ১৭ বছরের সংসার। তিলে তিলে সোনার গয়না, খাট-পালঙ্ক, টিভি-ফ্রিজ সব করেছিলাম। কোনো কিছুই নেই। মন্টু-রাশিদার লোকজন সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে। সন্তানদের নিয়ে পথে পথে ঘুরছি। সন্তানদের নিয়ে আর কত দিন পথে পথে ঘুরব?’
আজ রোববার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে খাদিজা বেগম এসব কথা বলছিলেন। তিনি কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের লোহারংক গ্রামের প্রবাসী বাশার মোল্লার স্ত্রী।
খাদিজা বেগম অভিযোগ করেন, ‘৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হিরণ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সংরক্ষিত সদস্য পদে জয়ী প্রার্থী মাহমুদা খানমকে আমরা ভোট দিয়েছি। এ জন্য ক্ষিপ্ত হয়ে পরাজিত প্রার্থী রাশিদা বেগম ও তাঁর স্বামী মন্টু শেখের লোকজন আমাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে গেছেন। আমরা ২৫টি পরিবার এখন বাড়িছাড়া।’সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ষাটোর্ধ্ব মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ৪ ছেলে বিদেশে থাকে। নির্বাচনের দিন রাতে মন্টু-রাশিদার লোকজন আমাদের বাড়িতে হামলা করে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। তারা বাড়ির নারী–শিশুদের মারধর করে। আমরা এখন বাড়িতে থাকতে পারছি না। আমরা প্রশাসনের কাছে এই হামলা ও লুটপাটের বিচার চাই।’
মালা বেগম (২৫) নামের আরেকজন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘মন্টু ও রাশিদার লোকজন শুধু বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে ক্ষান্ত হয়নি। তারা আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। আমাদের প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা কোটালীপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’এ বিষয়ে হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত (এক, দুই ও তিন) সদস্য পদে পরাজিত প্রার্থী রাশিদা বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা কোটালীপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাকারিয়া বলেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তে যাঁরা দোষী প্রমাণিত হলে, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।