কোন রহস্যের কারণ আবিষ্কার করতে বিজ্ঞানীরা ব্যর্থ?
বিচিত্র এ পৃথিবী। বিশাল এ পৃথিবীর আনাচে কানাচে কত যে রহস্য ছড়িয়ে রয়েছে যাদের গুঢ় রহস্যের কিনারা করতে বিশ্বের তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীরা অসহায়ভাবে ব্যর্থতার জ্বালায় দগ্ধ হচ্ছেন। অনুদঘাটিত রহস্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে “বার্মুডা ট্র্যাঙ্গল” এর রহস্য। আটলান্টিক মহাসাগরের একটি ছোট অংশের তিনটি দিক ফ্লোরিডা, পুয়ের্টো রিকো এবং বার্মূডা দিয়ে ঘেরা। এই জায়গাটিই বার্মুডা ট্রাঙ্গেল নামে পরিচিত।
বাংলার এর নামকরণ করা হয়েছে “মৃত্যুর ত্রিভুজ”। আবার কোন কোন অঞ্চলের মানুষ মুখ বিকৃত করে বিতৃষ্ণার সঙ্গে উচ্চারণ করে ‘ আতলান্তিকের কবরখানা ‘। একের পর এক রহস্যজনক ঘটনা ঘটে চলেছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে ১৯৪৫ থেকে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে। এক শ’-ওর বেশি বিমান এবং এক হাজারেরও বেশি মানুষ রহস্যজনক ভাবে এখান থেকে বেপাত্তা হয়ে গেছে। অথচ জায়গাটি এমন কোনো দূর্গম নয় যে, যেকোন সময় কারণে- অকারণে দূর্ঘটনা ঘটে জীবন ও সম্পদহানী ঘটতে পারে।
কেবল বিমানের ব্যাপারই নয়, জলযানও একেবারে অবিশ্বাস্য উপায়, রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়েছে। কেন এমনটি হয়? এমন কোন গভীর রহস্য রয়েছে যার ফলে মানুষের বিদ্যে-বুদ্ধিকে ভোঁতা করে দিয়ে একের পর এক আকাশযান ও জলযানকে নিশ্চিত ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে?
বিমান সংস্থার রিপোর্ট থেকে জানা যায়, অধিকাংশ বিমান চালক বেতার বার্তা পাঠিয়েছেন যে তিনি বেতার বার্তা পাচ্ছেন না। অর্থাৎ অকস্মাৎ এমন কোনো স্থানে বিমান পৌঁছে গেছে তা চালকও অনুমান করতে পারছে না। ব্যস বিমান চালকের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ হয়ে গেছে। এমনি করেই সেখান থেকে ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে বারোটিরও বেশি বিমান, জাহাজ ও নৌকো অভাবিত ভাবে নিখোঁজ হয়েছিল। চিরুণি তল্লাশ চালিয়েও একটিরও হদিস পাওয়া যায় নি।
পর পর কাটতে না কাটতে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে আবার দুটো যাত্রী বিমান নিখোঁজ হয়ে যায়। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে ঘটে আরো বড় ঘটনা। চার চারটি ইঞ্জিন যুক্ত একটি বিমান, একটি অতিকায় ট্রলার এবং তিনটি ট্যাঙ্কার।
এরকম বহু অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটে চলছে বারমুডা ট্রাঙ্গলে। বারমুডা ট্রাঙ্গল নামক থানে তিন লক্ষ পাঁচ হাজার বর্গ কিলোমিটার জায়গার জল ও আকাশ পথ।
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ গবেষণার মাধ্যমে যে সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে সেখানকার সমুদ্রে অতিকায় একটি ফাটল রয়েছে, যার ফলে জাহাজ নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। আবার কারো কারো মত হচ্ছে, অন্য গ্রহের অধিকতর উন্নতকোন মহাকাশযানে চড়ে হানা দেয় পৃথিবীর বুকে। তারা সুযোগ বুঝে বিমান নিয়ে নিজেদের গ্রহে চলে যায়। কেউ বা মতামত ব্যক্ত করেন, পৃথিবীর অভ্যন্তরে ভুমিকম্পের ফলে বিশাল জলস্তম্ভ সৃষ্টি হয়েছে৷ আর তা জাহাজ, নৌকা, ট্রলার এবং বিমান সবকিছুকে নিজের গহ্বরে টেনে নেয়।
আবার কোনো কোনো বিজ্ঞানী একে চৌম্বকীয় তত্ত্ব দিয়ে বিচার করেছেন।
কেউ বা মতামত ব্যক্ত করেন, রাসায়নিক যৌগের ফলেই এমন অবিশ্বাস্য সব কান্ড ঘটে চলেছে। কিন্তু বারমুডা ট্রাঙ্গেলের আসল রহস্য আজও অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে।
রিপোর্টারঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।
