আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহর ‘ভাই’ শাহ আলী চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার দেওয়ান বাজার এলাকার স্থায়ী ঠিকানায় বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গত রোববার শাহ আলীকে অস্ত্র, মাদকসহ গ্রেপ্তারের পর উখিয়া থানায় করা মামলার এজাহারে পুলিশ এ তথ্য উল্লেখ করে।১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ রুহুল আজম বাদী হয়ে করা মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার দেওয়ান বাজারের জয়নব কলোনির স্থায়ী ঠিকানা ব্যবহার করে শাহ আলী পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেছেন।
জানতে চাইলে মোহাম্মদ রুহুল আজম বলেন, শাহ আলীর কাছে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে, যেখানে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা লেখা আছে দেওয়ান বাজার জয়নব কলোনি।রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তায় এখন সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হয় আরসাকে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রত্যাবাসনপন্থী নেতা মুহিবুল্লাহসহ গত বছরের অক্টোবরে সংঘটিত ছয় খুনের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে আতাউল্লাহর বিরুদ্ধে। তাঁর ‘ভাই’য়ের কাছে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জুর মোরশেদ গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আরসা প্রধানের ভাই কবে, কীভাবে চট্টগ্রাম শহরের ঠিকানায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েছেন, তা তদন্ত করা হচ্ছে। এখনো কিছু জানা যায়নি। সোমবার (গতকাল) শাহ আলীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে আদালতে।
আরসা প্রধানের ‘ভাই’য়ের জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখ করা ঠিকানা (দেওয়ান বাজার) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড। শাহ আলী কীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র পেলেন, জানতে চাইলে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী গতকাল রাতে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমাকে কেউ অবহিত করেনি। ফাইলপত্র দেখে বিস্তারিত জানতে পারব। আমার সই কেউ জাল করেছে কি না, তা-ও দেখতে হবে।’চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসাইনও জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরটি সঠিক কি না, যাচাই করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরা শুনেছি। তদন্ত কর্মকর্তা যদি জানতে চান কিংবা কেউ যদি লিখিত অভিযোগ করেন, সে ক্ষেত্রে বিষয়টি আমরা যাচাই করে দেখব। আদৌ জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরটি সঠিক কি না, যাচাই করা হবে।’ তিনি বলেন, যদি সঠিক হয়ে থাকে, এটি কীভাবে হলো, তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এপিবিএন জানিয়েছিল, শাহ আলীকে গত রোববার উখিয়ার কুতুপালং ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নৌকার মাঠ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার শাহ আলী আরসা প্রধানের ভাই। এই ঘটনায় রোববার রাতে উখিয়া থানায় শাহ আলীসহ দুজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা হয়।