পৌষের প্রায় শেষ, মাঘ আসি আসি করছে। এই সময়ে নিত্যদিন হাড়কাঁপানো শীত আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে দেশের বেশির ভাগ এলাকা। প্রতিদিন তাপমাত্রা পাল্লা দিয়ে কমতে থাকে। আর চার দিন ধরে ঘটছে তার উল্টো ঘটনা। রাতেও শীত কম। আর দিনে প্রখর রোদ যেন গ্রীষ্মের উষ্ণতাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে।আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ বলছে, গত শনিবারের তুলনায় গতকাল রোববার মধ্যরাত থেকে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে গেছে। আর উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় আজ সোমবার সকাল থেকে দিনের তাপমাত্রা একলাফে ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আজ দিন যত গড়াবে, রোদের তাপ তত বাড়বে। কারণ, ভূমধ্যসাগর পেরিয়ে আসা মেঘের দল উত্তরাঞ্চল দিয়ে দেশের সীমানায় প্রবেশ করেছে। ওই পথ দিয়ে শীতের হিমেল বাতাস এত দিন দেশে প্রবেশ করছিল। মেঘ এসে ওই পথে বাধার প্রাচীর তৈরি করেছে। ফলে শীতের ঠান্ডা বাতাস দেশের ভেতরে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে তাপমাত্রা দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে। তবে আজ রাত থেকে মেঘ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। কাল মঙ্গলবার মেঘের ওপরে মেঘ জমে দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা ও ঝিরঝিরে বৃষ্টি ঝরাতে পারে।এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, কাল থেকে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মেঘ এসে পড়বে। এতে দিনে রোদের দাপট কমে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। তবে বৃষ্টি চলে এলে কিছুটা ঠান্ডা বাতাসও এর সঙ্গে যোগ দেবে। ফলে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঠান্ডার অনুভূতি বেড়ে যেতে পারে।
গতকালের মতো আজও রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি ছিল, যা গত ৫ বছরের ডিসেম্বরের ১০ তারিখ পর্যন্ত সময়কালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। তবে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা মাপা হয় বেলা তিনটায়। ফলে ওই সময়ে তাপমাত্রা মেপে বলা যাবে, তা গতকালের তুলনায় বেশি না কম হবে। গতকাল ৪৩ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা ছিল।আজ দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল যা ছিল ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ দেশের কোথাও আর শৈত্যপ্রবাহের তাপমাত্রা, অর্থাৎ ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে ছিল না। শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল কক্সবাজারে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।তবে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে রোদের পাশাপাশি কুয়াশাও আছে। কুয়াশা আজ সন্ধ্যার পর দ্রুত বাড়তে পারে। আকাশে মেঘ আর দৃষ্টিসীমায় কুয়াশার কারণে যানবাহনগুলোকে সাবধানে ও আলো জ্বালিয়ে চলাচল করতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কাল সকাল পর্যন্ত ওই কুয়াশা থাকতে পারে।