সব ব্যাকটেরিয়া খলনায়ক নয়

ব্যাকটেরিয়া-নামটা শুনলেই মনে হয় আস্ত এক ভিলেন।শুধু নানারকম রোগ সৃষ্টি করছে,ক্ষতি করছে।কিন্তু ব্যাকটেরিয়া যে শুধু ক্ষতিই করে,তা কিন্তু না।আমাদের নানারকম উপকারও করে থাকে এই অণুজীব।আজ তাহলে ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতাগুলো জেনে নেয়া যাক।

ব্যাকটেরিয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে চিকিৎসা ক্ষেত্রে।সাবটিলিন,পলিমিক্সিন নামের এই গুরুত্বপূর্ণ এন্টিবায়োটিকগুলো ব্যাকটেরিয়া থেকে তৈরী হয়।আবার কলেরা, টাইফয়েড, যক্ষ্মা সহ নানা রোগের টিকা তৈরীতে ব্যবহৃত হয় ব্যাকটেরিয়া।

কৃষি ক্ষেত্রেও ব্যাকটেরিয়া সহায়ক। মাটির উর্বরতা বাড়াতে এটি সাহায্য করে।আবার নানারকম আবর্জনা পঁচিয়ে তা থেকে সার তৈরীতেও ব্যাকটেরিয়া কাজ করে।
বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া বায়ু থেকে নাইট্রোজেন গ্রহণ করে নাইট্রোজেন যৌগ হিসেবে মাটিতে স্থাপন করে।ফলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
বিভিন্ন প্রকার পতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়।আর ধানের উৎপাদন বাড়াতে ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা তো রয়েছেই।

শিল্পক্ষেত্রেও কিন্তু প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখে কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়া।
চা,কফি,তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়।
দুধ থেকে মাখন,দই,পনির,ঘোল,ছানা তৈরীতে ল্যাকটোব্যাসিলাস নামক ব্যাকটেরিয়া ব্যবহৃত হয়।
ব্যাসিলাস নামের ব্যাকটেরিয়া চামড়ার লোম ছাড়ানোর কাজে উপযোগী উপাদান।
এছাড়াও বায়োগ্যাস, টেস্টিংসল্ট, নানারকম রাসায়নিক পদার্থ তৈরীতে ব্যাকটেরিয়া দারুণ প্রয়োজনীয়।

আমাদের জীবনেও কিন্তু কিছু ব্যাকটেরিয়া বলতে গেলে আশীর্বাদই বটে।বিভিন্ন প্রকার ব্যাকটেরিয়া ভিটামিন বি,ভিটামিন কে,ফোলিক এসিড, বায়োটিন প্রভৃতি তৈরীতে ব্যাকটেরিয়া কাজে লাগে।
আর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, গবাদিপশুর অন্ত্রে একপ্রকার উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে যারা তাদেরকে সেলুলোজ হজম করতে সাহায্য করে।ফলে তারা ঘাস,খড় খেয়ে জীবন ধারণ করতে পারে।

নানাপ্রকার আবর্জনা পঁচিয়ে, পয়ঃনিষ্কাষনে সাহায্য করে, সমুদ্রে ভাসমান তেল অপসারণ করে ব্যাকটেরিয়া পরিবেশের উন্নয়নেও দারুণভাবে কাজে লাগে।

@দীপা সিকদার জ্যোতি

Leave a Comment