এস্তেঞ্জা কী?
এস্তেঞ্জা হলো মল মূত্র ত্যাগ করার পর শৌচ করা বা ঢিলা ব্যবহার করা।
কীভাবে এস্তেঞ্জা করলে উত্তম রূপে তাহারাত হাসিল হবে, এ সম্পর্কে অনেকের মনে দ্বিধা-দ্বন্দ বা বিভ্রান্তির শিকার হয়। অনেকে সঠিকভাবে এস্তেঞ্জার নিয়ম না জানার কারণে সঠিকভাবে পবিত্রতা অর্জন করতে পারে না। ফলে তার ইবাদত কবুলের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এই সামান্য একটি বিষয়ও। তাই এ সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান রাখা প্রত্যেকের আবশ্যক।
আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন, সেখানে অর্থাৎ কুবায় এমন লোকেরা রয়েছে, যারা উত্তম রূপে পবিত্রতা অর্জন করা পছন্দ করে। নিশ্চয় আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।
(সূরা আত তাওবা)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা পেশাব পায়খানা থেকে সর্তক। কেননা তা থেকে অসর্কতার কারণেই বেশির ভাগ কবর আযাব হয়ে থাকে।
(দারে কুতনী)
মহান রবের ইরশাদকৃত বাণী এবং রাসূলে পাক সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুখ নিঃসৃত বাণীর মাধ্যমে সহজেই অনুমেয় যে, এস্তেঞ্জা আমাদের সকলের জন্য কতটা গুরুত্ব বহন করে।
চলুন, এস্তেঞ্জা সমন্ধে খানিকটা জ্ঞান লাভ করে আসি।
এস্তেঞ্জার পূর্বে ইস্তেবরা আবশ্যক। ইস্তেবরা হলো পেশাব পায়খানা নির্গত হওয়ার স্থান থেকে অবশিষ্ট নাপাকি এমন ভাবে দূর করে ফেলা যেন এস্তেঞ্জাকারীর প্রবল ধারণা হয় যে, সে স্থানে আর কোনো নাপাকি অবশিষ্ট নেই। এক্ষেত্র কেউ কোন বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণে অভ্যস্ত হলে সে তা অবলম্বন করবে।
যেমন- দাঁড়ানো, হাঁটাহাটি করা, পায়ে ভর দেওয়া কিংবা গলা খাঁকার দেওয়া ইত্যাদি।
আর এস্তেঞ্জা সম্পর্কে বিশদ আলোচনা রয়েছে।
নাপাকি যদি নির্গমনের স্থান অতিক্রম করে এবং তা এক দের হামের বেশী হয় তাহলে পানি দ্বারা তা ধৌত করা ফরয। সেই নাপাকিসহ নামাজ পড়া জায়েজ হবে না।
নাপাকি যদি তার নির্গমনের নিজ স্থান অতিক্রম করে আর তা এক দিরহাম পরিমাণ হয়, তাহলে পানি দ্বারা নাপাকি দূর করা ওয়াজিব। আর যদি নাপাকি স্বস্থান অতিক্রম না করে তাহলে এস্তেঞ্জা করা সুন্নাত।
শুধু মাত্র পানি দ্বারা এস্তেঞ্জা করা জায়েজ আছে। অনুরূপ ভাবে নাপাকি এক দিরহাম পরিমাণ না হওয়া পর্যন্ত পাথর বা অনুরূপ কিছুতে এস্তেঞ্জা সীমাবদ্ধ রাখা জায়েজ আছে। কিন্তু পানি দ্বারা এস্তেঞ্জা করা ভাল।
তবে উত্তম হলো, প্রথমে পাথর কিংবা অনুরূপ পদার্থ দ্বারা নাপাকি মুছে ফেলা, তারপর পানি দ্বারা ধৌত করা। কারণ পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে পানি অধিক কার্যকরী।
তিন পাথর দ্বারা এস্তেঞ্জা করা মুস্তাহাব। তবে দু’টি বা একটি পাথরের মধ্যে সীমাবদ্ধ করাও জায়েজ আছে, যদি তা দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা সম্ভব হয়।
পাথর দ্বারা মোছা থেকে অবসর হওয়ার পর পানি দ্বারা প্রথমে হাত ধৌত করবে। তারপর নাপাকির স্থান ধৌত করবে। নাপাকির স্থান ভাল ভাবে ধৌত করবে যেন দূর্গন্ধ দূর হয়ে যায়। আর যখন শৌচকর্ম থেকে অবসর হবে তখন হাত মাটিতে ভালভাবে ঘষে বা সাবান দ্বারা ধৌত করবে যাতে দূর্গন্ধ দূর হয়ে যায়।
এস্তেঞ্জার হুকুম অনুসারে এস্তেঞ্জা করলেই উত্তম রূপে পবিত্রতা হাসিল হবে। যা যাপিত জীবন অর্থাৎ দুনিয়া ও আখিরাত এই দুই জাহানের জন্যই কল্যাণকর। আল্লাহ সকলকে সহীহ্ বুঝ দান করুন। আমিন।
এই সমস্ত ফিকহ প্রদান করেছেন- “হযরত মাওলানা শফীকুর রহমান নাদভী (র:)
লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।
