পবিত্রতা সমন্ধে জানুন

আমাদের রব আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধুমাত্র তাঁর ইবাদত করার জন্য। সুতরাং ইবাদত হলো আল্লাহ কর্তৃক আমাদের উপর প্রেরিত দায়িত্ব। এটা আল্লাহর হক।

তাই প্রত্যেক মুসলিমের কাছে রবের ইবাদত একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু এই ইবাদত রবের কাছে তখনই গ্রহণযোগ্য হবে, যখন একজন বান্দা পাক-পবিত্র থেকে তাঁর ইবাদত করবে।

উল্লেখ্য, জিকির-আজগার এবং দুআর ক্ষেত্রে সাধারণত পবিত্রতার উপর তেমন জোর দেয়া হয়নি।

তাছাড়া বাকী সব ইবাদতের ক্ষেত্রে পবিত্রতা জরুরী।

তাহলে আসুন প্রথমে জেনে নিই পবিত্রতা কী এবং সে সম্পর্কে মহান রব্বুল আলামিন ও তাঁর হাবিব মুহাম্মাদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কিছু বাণী।

তাহারাত শব্দের আভিধানিক অর্থ পবিত্রতা। আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’য়ালা তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন। (সূরা বাকারা: ২২২)
অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ”। (মুসলিম শরীফ)।

পবিত্রতা হলো সমস্ত ইবাদাতের ভিত্তিমূল। সুতরাং পবিত্রতা ছাড়া নামাজ শুদ্ধ হবে না। যেমন- আল্লাহর নবী মুহাম্মাদ সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ” নামাজ বেহেশতের চাবি আর পবিত্রতা হলো নামাজের চাবি।” (মুসনাদে আহমাদ)

তাহারাতের প্রকারভেদ।

শরীআতে তাহারাত বা পবিত্রতা দুই প্রকার। যথা-
১।তাহারাতে হুকমিয়া।
২। তাহারাতে হাকীকিয়া।

তাহারাতে হুকমিয়া ও হাকীকিয়া কী?
হদস থেকে পবিত্রতা অর্জন করাকে বলা হয় তাহারাতে হুকমিয়া। আর নাজাসাত থেকে পবিত্রতা অর্জন করাকে বলা হয় তাহারাতে হাকীকিয়া।

হদস থেকে এবং নাজাসাত থেকে পবিত্রতা অর্জিত হয় কীভাবে?
হদস থেকে পবিত্রতা অর্জিত হয় উযূ বা গোসলের দ্বারা কিংবা পানি ব্যবহারে অপারগ হলে তায়াম্মুম দ্বারা। আর নাজাসাত থেকে পবিত্রতা অর্জিত হয় পবিত্রতার মাধ্যম সমূহ যথা অবিমিশ্র পানি, পবিত্র মাটি, পাথর কিংবা পরিশোধনের মাধ্যমে নাপাকি দূর করার দ্বারা।

যে সমস্ত পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হয়:

সাধারণ পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত হয়। প্রশ্ন হতে পারে, সাধারণ পানি কোনগুলো? সাধারণ পানি হলো, যে পানি তার সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্যের উপর বিদ্যমান রয়েছে এবং তার সাথে কোনো নাপাকি মিশ্রিত হয়নি এবং অন্য কোনো কিছু তার মাঝে প্রভাব/প্রাধান্য বিস্তার করেনি।

নিম্নোক্ত পানিসমূহ সাধারণ পানির অন্তর্ভুক্ত। যথা-
১। বৃষ্টির পানি
২। নদীর পানি
৩। কূপের পানি
৪। ঝরণার পানি
৫। সমুদ্রে পানি
৬। বরফ বিগলিত পানি
৭। শিলা বিগলিত পানি।

এই সমস্ত পানি দ্বারা আপনি অযু, গোসল করে পবিত্র হতে পারেন। তাতে শরীয়াতে কোনো নিষেধ নেই।

এই সমস্ত ফিকহ প্রদান করেছেন: হযরত মাওলানা শফীকুর রহমান নাদভী (র:)।

লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া

Leave a Comment