প্লাস্টিক রিসাইক্লিং – এ অস্ট্রেলিয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের ‘ মাইক্রো সলিউশন ‘

অস্ট্রেলিয়ার  সিডনির একটি ‘  মাইক্রো  রিসাইক্লিং’  কারখানা পুরানো প্লাস্টিককে নতুন ভাবে ব্যবহারযোগ্য করার উপাদানে পরিণত করতে  এক রিভল্যুশনারি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে বলে জানা যায়। যাকে বলা হচ্ছে মাইক্রো সলিউশন। 

প্রায় তিন দশক ধরে পুরো পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক ‘প্লাস্টিকের পুনর্ব্যবহারযোগ্য ‘ পণ্য আমদানি করার পর, চীন ২০১৭ সালে এই আমদানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এই নিষেধাজ্ঞা মূলত চীনের পরিবেশ পরিষ্কার রাখার এবং মানুষের জীবনযাত্রার মানের উন্নতি করার প্রচেষ্টার একটি অংশ। 

চীন তার এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশগুলোর টনক নড়ে এবং কি করে নিজ দেশেই এই প্লাস্টিক পলিউশন কমানো যায় বা  এডভান্সড্ রিসাইক্লিং প্রসেস ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে গবেষণা শুরু হয়।  এরই প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার ইন্জিনিয়াররা উদ্ভাবন করেন এই ‘মাইক্রো সলিউশন ‘ পদ্ধতি।   দাবি করেন যে, তারা এমন একটি প্রযুক্তি আবিস্কার করেছেন যা প্লাস্টিককে সম্পূর্ণভাবে  রিসাইক্লিং করে হ্রাস করে এবং এই  পুরো প্রসেস জন্য প্র‍য়োজনীয় মেশিনারিজ একটি সিঙ্গেল রুমেই  ফিট করে যায়। এমনকি এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে না এক্সট্রা  কোন ট্রান্সপোর্টেশনের । এই কারখানায়   সেন্ট্রালাইজড্ ফেসিলিটিজ তৈরি  করা হয়েছে মাইক্রোস্কেলে সেটআপিং করে। 

এই মাইক্রো রিসাইক্লিং কারখানায় ‘গ্রীন ম্যানুফ্যাকচারিং টেকনোলজি‘ ব্যবহার করা হয়। সব প্লাস্টিক বর্জ্য গুড়া করে মিক্স করা হয় এবং উচ্চ তাপমাত্রায় দেয়া হয় যা থেকে সিঙ্গেল লন ফিলামেন্ট তৈরি করা হয়। আর এই ফিলামেন্ট ব্যবহার করা হয় থ্রিডি প্রিন্টিং এ। এছাড়াও রিসাইক্লেল্ড প্লাস্টিক থেকে তৈরি করা যায়  গ্লাস প্যানেল যা বিল্ডিং প্রডাক্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই মাইক্রো রিসাইক্লিং কারখানা থেকে নতুন কোনো বর্জ্য তৈরি হবে না বলে ইঞ্জিনিয়াররা দাবি করেন। তাই এই মাইক্রো সলিউশন হবে পরিবেশবান্ধব। এবং এটি যেহেতু কোনো মেগা ফ্যাসিলিটিজ এটি নয় তাই শুধুমাত্র লোকালি প্রডিউসড্ প্লাস্টিকের বর্জ্য এরা কালেক্ট করবে এবং রিসাইক্লিং এ ব্যবহার করবে।  

এই মাইক্রো রিসাইক্লিং কারখানার ইন্জিনিয়াররা বলেন যে, এই মাইক্রোফ্যাক্টরিগুলি কেবল যে শুধু উচ্চ পারফরম্যান্স উপকরণ এবং পণ্য উৎপাদন করতে পারে  তা না,  তারা ব্যয়বহুল মেশিনির প্রয়োজনীয়তা অপসারণ করে এবং বর্জ্য পুড়ানো অথবা ল্যান্ডফিলে ট্রান্সপোর্ট করে নিয়ে যাওয়া এসব কাজের প্রয়োজনীয়তা কমায়। 

এই উদ্ভাবন থেকে ইন্জিনিয়ার রা এটাই আশা করছেন যে, এই মাইক্রো রিসাইক্লিং কারখানা ধীরে ধীরে প্রত্যেক শহরে একটি করে তৈরি করা হলে তা লোকালি প্লাস্টিক বর্জ্যকে রিসাইকেল করে পরবর্তীতে সেখান থেকে মূল্যবান প্রডাক্ট তৈরি করবে। এবং গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন এ অবশ্যই তা ইতিবাচক প্রভাব  রাখবে। 

Leave a Comment