Close Menu
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী
    • Home
    • Rangpur
    • International
    • Islamic
    • Life Style
    • Insurance
    • Health
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী

    হিদায়ার পথে

    মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়াBy মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়াAugust 17, 2021Updated:August 17, 2021No Comments4 Mins Read
    FB_IMG_16283614806997436

    প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট নাম্বার থেকে কল আসে। গুণে গুণে পাঁচ বার। ফোন করেন আমার দাদুভাইয়া মোহাম্মদ আফজাল হোসেন। তিনি আমাদের মসজিদের মুয়াজ্জিন এবং ইমাম। আমাকে কল করার কারণটা আমি জানি। তাই এই প্রিয় মানুষটির কল আমি সুন্দরভাবে উপেক্ষা করি। তবুও তিনি আমার উপর রাগ হননি। বরঞ্চ আমার গায়ে হাত বুলিয়ে দুআ করেন।

    আমি তখন উচ্চ মাধ্যমিকের ২য় বর্ষের ছাত্র। বিভাগীয় একটি কলেজের ফার্স্ট বয়। ডানপিটে স্বভাবের হলেও লেখাপড়ায় ছিলাম ঠিকঠাক। বাসায় এজন্যই মূলত সবকিছুতে ছাড় পেয়ে যেতাম। তেমন কিছু বলত না কেউ।

    ঘটনার শুরু ২য় বর্ষের শেষের দিকে। টেস্ট পরীক্ষা চলছিল। রাত জেগে পড়তাম আর ভোরে ঘুমাতাম। সেদিনও পড়া শেষ করেছি। ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। চারদিকে আজানের সুমধুর ধ্বনি একে একে থেমে যাচ্ছিল। হঠাৎ আমাদের মসজিদে অন্য একজন আজান দিল। আমি চমকে উঠলাম। এরকম তো হওয়ার কথা না। পরক্ষণে ভাবলাম, হয়তো শখের বশে কেউ আজান দিল।

    আজান শেষ হয়ে নামাজের ওয়াক্ত শুরু হলো। কিন্তু দাদুর ফোন থেকে এখনো ফোন এলো না। এটা কীভাবে সম্ভব! গত কয়েক বছরে, এই নিয়মের হেরফের একবারও ঘটেনি। ফোনে চার্জ নেই হয়তো, এই ভেবে কাঁথা মুড়িয়ে দিলাম ঘুম।

    .

    প্রায় ঘন্টা খানিকের মধ্যে দরজায় ধুপধাপ শব্দ। চোখ খুলতে পারছিলাম না কিন্তু শব্দগুলো কানে এসে বাজছে। একটু পর শুনলাম,আম্মুর কান্না জড়ানো কন্ঠ। আমার নাম ধরে ডাকছে, আয়ান! আয়ান।

    প্রচণ্ড বিরক্তি নিয়ে উঠলাম। হাতড়িয়ে হাতড়িয়ে দরজার কাছে গেলাম। দরজা খুলতেই আম্মু আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমি পড়েই যাচ্ছিলাম। শক্ত হাতে আঁকড়ে ধরলাম দেয়াল।

    ‘ তুই ঘুমাচ্ছিস? ঐ দেখ তোর দাদু..’ আম্মু কথা শেষ করলো না। ডুকরে কেঁদে উঠলো। আমি চোখ কচলিয়ে দেখি আঙিনায় লোকে লোকারণ্য।

    টলতে টলতে সামনে এগিয়ে গেলাম। রহিম চাচা আমাকে দেখে, দাদুর মুখ থেকে কাপড় সরালেন। দেখলাম, দাদু যেন পরম নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে। ঠোঁটে এক চিলতে হাসির রেখাও দৃশ্যমান।

    আব্বু গ্রামের কয়েকজনের সাথে কথা বলছে। কাছে গিয়ে বললাম, জানাজা কখন হবে? আব্বু বললো, এখনো ঠিক হয়নি। তবে বাবা তো বরাবরই বলতেন দ্রুত যেন তাঁর দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়।

    ‘জানাজার আগে আমাকে ডাকিও। আমি ঘুমাতে গেলাম।’ বলেই হাই তুলছিলাম। আব্বুসহ পাশে দাঁড়ানো সবাই অবাকনেত্রে তাকাচ্ছিল আমার দিকে। আমি আর কোনো কথা না বলে রুমে আসলাম ভাবলেশহীন ভাবে।

    .

    আমি নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিলাম। যথাসময়ে আমাকে ডাকা হল। অংশ নিলাম জানাজায়। দাদুর লাশের খাটলিও ধরেছিলাম। ততক্ষণ আমার অনুভূতি শূন্য ছিল।

    কিন্তু দাদুকে যখন কবরে নামানো হলো। আমি চিৎকার করে উঠলাম। কাউকেই লাশ নামাতে দিচ্ছিলাম না। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রত্যেকেই অপ্রস্তুত হয়ে গেল। আব্বু আমাকে কাছে টেনে নিলেন। আমাকে বোঝাতে চেষ্টা করলেন।

    আমি হাউমাউ করে কাঁদছিলাম। বলেছিলাম, “এত ছোট জায়গায় দাদু থাকতে পারবে না আব্বু। তুমি দাদুকে নিয়ে চলো। আমার সাথে থাকবেন উনি। দাদু মারা যাননি। দাদু তো অভিমান করেছেন। আমাকে যে নামাজ পড়ার জন্য ফোন দিত। আমি ধরতাম না জন্য বোধ হয় অভিমান করেছেন। দাদুকে বলো আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই পড়বো। বলো দাদুকে, দেখ কত খুশি হন উনি।”

    “মুখ ঢেকে রেখেছে কেন? নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হবে তো।” বলেই দাদুর লাশের কাছে গিয়ে বাঁধন খোলার চেষ্টা করছিলাম। আব্বুসহ অনেকে দৌড়ে এসে আমাকে ধরে রাখলো।

    আমার হৃদয়-বিদারক আর্তনাদে অনেকের চোখেই পানি এসেছিল। কিন্তু তবুও ওরা দাদুকে মাটি চাপা দিয়েছিল স্বার্থপরের মতো।

    .

    সেদিন আব্বু আমাকে নিয়ে কবরস্থানে বসেছিল অনেকক্ষণ। তারপর বললো,

    ؕ کُلُّ نَفۡسٍ ذَآئِقَۃُ الۡمَوۡتِ
    وَمَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ .

    “প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আর পার্থিব জীবন ছলনাময় ভোগ ব্যতীত আর কিছুই নয়।” [৩:১৮৫]

    আর কিছু না বলে উঠলেন। ধীর পায়ে চলে গেলেন। আমি বসে রইলাম।

    নিজেকে জিজ্ঞেস কয়েকটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলাম।
    ১.আমি কে?
    ২.আমি কোথায় থেকে এসেছি?
    ৩.আমি কোথায় ফিরে যাব?
    ৪.আমাকে কেন সৃষ্টি করা হল?
    ৫.আমার জীবনের উদ্দেশ্যে কী?
    ৬.আমি কোন পথে আছি?

    নিজেকে করা এই প্রশ্নগুলো, আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। দিক নির্ণয়ের যন্ত্রের মতো, আমাকে দেখিয়ে দিয়েছে সঠিক পথ। যে পথে আমার রব আমাকে আহ্বান করেছেন। যে পথে রয়েছে কল্যাণ, আত্মতৃপ্তি, রহমত ও অনাবিল প্রশান্তি।

    প্রিয় মানুষটি হারানোর বিনিময়ে আমি সেই পথের সন্ধান পেয়েছি। করুণাময় এই অধমের অন্তরে করুণা করে দ্বীনের দীপশিখা জ্বালিয়ে দিয়েছেন। আমি কি তাঁর কৃতজ্ঞ বান্দা হব না?

    লেখা: মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।

    মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
    • Website

    আমার নাম মাহাজাবিন শরমিন প্রিয়া। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেছি। ইসলাম, প্রযুক্তি এবং গণিতসহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখিতে আমার গভীর আগ্রহ রয়েছে। আমার জ্ঞান ও দক্ষতা দিয়ে আমি পাঠকদের জন্য অর্থবহ ও আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করি। মাহাজাবিনের লেখা বিষয়বস্তু তথ্যসমৃদ্ধ এবং পাঠকের জ্ঞান ও দৃষ্টিভঙ্গি বৃদ্ধিতে সহায়ক হিসেবে প্রমাণিত হয়।

    Leave A Reply Cancel Reply

    সাম্প্রতিক
    • সুস্থ যৌনজীবনের জন্য জরুরি ১০টি পরামর্শ
    • গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর যত্নের সম্পূর্ণ গাইড
    • ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার কৌশল
    • ডিপ্রেশন মোকাবিলায় প্রাকৃতিক সমাধান
    • ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা
    • শিশুদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার উপায়
    • শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস
    • গরমে সুস্থ থাকার জন্য করণীয় ও বর্জনীয়
    • শরীরের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব
    • মানসিক চাপ কমিয়ে সুস্থ থাকার কৌশল
    • শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়
    • চোখের সুস্থতা বজায় রাখার ঘরোয়া টিপস
    • হার্টের যত্নে কোন খাবার বেশি খাবেন
    • উচ্চ রক্তচাপ কমানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি
    • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ উপায়
    • প্রেমে একে অপরকে সময় দেওয়ার গুরুত্ব
    • দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে নতুন করে সাজানোর কৌশল
    • প্রেমে আস্থা নষ্ট হলে কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন
    • সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলেশনশিপ পরিচালনার টিপস
    • প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে রাগ কমানোর ৫টি পদ্ধতি
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.