কুরবানির পশুর চামড়ার দাম

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পবিত্র ঈদুল আজহার জন্য কুরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে। গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ঢাকার জন্য প্রতি বর্গফুট ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং ঢাকার বাইরের জন্য ৩৩ থেকে ৩৭ টাকা।

এছাড়া প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়া ১৫ থেকে ১৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ দাম গত বছরের নির্ধারিত দামের চেয়ে কিছুটা বেশি।

বস্তুত গত বছর কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ‘পানির দরে’। চামড়ার দাম অস্বাভাবিক কমে যাওয়ায় দেশের অন্যতম এ রপ্তানি পণ্যটি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

বিশেষ করে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেখা দেয় হতাশা। উপযুক্ত দাম না পেয়ে অনেকে সেগুলো মাটিতে পুঁতে কিংবা রাস্তায় ফেলে দেন। চামড়ার দাম নিয়ে এমন পরিস্থিতি কাম্য নয়।

চামড়া সংগ্রহের সবচেয়ে বড় মৌসুম কুরবানির ঈদ। এ সময় মোট চামড়ার শতকরা ৮০ ভাগ সংগৃহীত হয়ে থাকে। ফলে এ সময়টায় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট চামড়ার দাম নিয়ে কারসাজি শুরু করে।

অভিযোগ আছে, শক্তিশালী সিন্ডিকেটের প্রভাবে কয়েক বছর ধরে ঈদের আগেই কুরবানির পশুর চামড়ার দাম কমিয়ে মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। তারপরও দেখা যায়, সাধারণ ও ক্ষুদ্র বিক্রেতারা ন্যায্যমূল্যে চামড়া বিক্রি করতে পারছেন না।

এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে তা দেশের চামড়া শিল্পের বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। কাজেই চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা জরুরি।

জানা যায়, এ বছর কুরবানির পশুর কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহণসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পৃথকভাবে কেন্দ্রীয় যৌথ সমন্বয়ক কমিটি, জাতীয় ও বিভাগীয় মনিটরিং টিম গঠন করেছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক তদারকির জন্য একটি কন্ট্রোল সেল চালু করেছে।

তাই আমরা আশা করব, বিগত বছরগুলোর মতো এবার আর চামড়ার দাম নিয়ে কেউ কারসাজি করার সুযোগ পাবে না; অর্থাৎ চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

মনে রাখতে হবে, কুরবানির পশুর চামড়ার টাকা গরিবের হক। কাজেই চামড়া ন্যায্যমূল্যে বিক্রি না হলে গরিব-দুঃখী, অসহায় ও দুস্থরা তাদের প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত হবেন, যা দুঃখজনক।

করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে পশু কুরবানির সংখ্যা এবার কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা আরও বেশি জরুরি বলে মনে করি আমরা।

Leave a Comment