হাইতির প্রেসিডেন্ট হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার

এক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল মইসি হত্যায় জড়িত সন্দেহে । তবে জোভেনেল হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে তাঁকে পুলিশ বিবেচনা করছে । আর আজ সোমবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয় । তবে পুলিশের ভাষ্যমতে, গ্রেপ্তার হওয়া চিকিৎসকের নাম ক্রিশ্চিয়ান ইমানুয়েল স্যানন (৬৩) । আর তিনি হাইতির নাগরিক । আর গত মাসের শুরুর দিকে এই চিকিৎসক একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে হাইতিতে আসেন । আর হাইতিতে ফেরার পেছনে তাঁর ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য’ ছিল।

হাইতির পুলিশপ্রধান লিওন চার্লস স্যাননকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্থানীয় সময় গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলন করে জানান । তবে সংবাদ সম্মেলনে হাইতির পুলিশপ্রধান বলেন, ‘এই ব্যক্তি (চিকিৎসক) রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে হাইতিতে আসেন ।’
তবে লিওন চার্লসের ভাষ্য, জোভেনেলকে হত্যার পরিকল্পনা প্রাথমিকভাবে ঘাতক দলের ছিল না । আর শুরুতে তাঁকে গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা ছিল । তবে পরে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনা হয় । জোভেনেলকে হত্যা করা হয় । আর হাইতির পুলিশপ্রধান তাঁর এই দাবির বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি ।

লিওন চার্লস আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট জোভেনেলকে হত্যার পর থেকে সন্দেহভাজন হত্যাকারীদের ওপর নজর রাখা হচ্ছিল । তবে মিশন শেষে এক ঘাতক প্রথমেই স্যাননকে ফোন করেন । তবে তিনি অন্য দুই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন । আর এই তিনজনকে হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী বলে মনে করছে পুলিশ । আর স্যানন বাদে অপর দুজনের নাম প্রকাশ করেননি পুলিশপ্রধান।

তবে জোভেনেল মইসিকে হত্যায় ২৮ জন ভাড়াটে ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতার কথা আগে জানিয়েছিল পুলিশ । আর তাদের মধ্যে ২৬ জন কলম্বিয়ার । আর বাকি ২ জন হাইতির বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক । তবে এই দলের ৩ জন পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে ইতিমধ্যে নিহত হয়েছে । আর এরই ধারাবাহিকতায় গ্রেপ্তার করা হয় ১৭ জনকে । তবে ৮ জনের পলাতক থাকার কথা জানানো হয়। এখন মূল পরিকল্পনাকারীদের একজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানাল পুলিশ ।

তবে নিরাপত্তা পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও বিচার বিভাগের একটি প্রতিনিধিদল গতকালই হাইতিতে পৌঁছায় । আর হাইতির প্রেসিডেন্ট জোভেনেল হত্যার তদন্তে সহায়তার জন্য দেশটিতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি দল যাচ্ছে বলে গতকালই মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন জানায় । তবে বিষয়টি নিয়ে জাতিসংঘসহ এ অঞ্চলের সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গেও আলোচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র । আর জোভেনেল হত্যার তদন্তে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইতিমধ্যে সহায়তা চেয়েছে হাইতি ।

তবে গত বুধবার মধ্যরাতে বন্দুকধারীরা প্রেসিডেন্ট জোভেনেলের ব্যক্তিগত বাসভবনে হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যা করে । তবে হামলায় তাঁর স্ত্রী মার্টিন মইসি আহত হন । তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন । আর জোভেনেল ২০১৭ সাল থেকে হাইতির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন । তবে জোভেনেল নিহত হওয়ায় হাইতির সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ক্লদে জোসেফ ।

Leave a Comment