বাঁশখালীতে পাহাড়ি ঢলে কয়েক শ মৎস্য চাষির মাথায় হাত

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পাহাড়ি ঢলে ১৫০০ পুকুর ও ৭০টি চিংড়ি ঘের ভেসে গিয়ে ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পুকুর ও মৎস্য প্রকল্পের ওপর দিয়ে ৫/৬ ফুট করে পাহাড়ি ঢল প্লাবিত হওয়ায় কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। গত বুধবার ভয়ংকর এই পাহাড়ি ঢলের তাণ্ডব চলেছে বাঁশখালীর বিভিন্ন গ্রামজুড়ে। কয়েক শ মৎস্য চাষি লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগে মাছ চাষ করেছিল। অনেক চাষি ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে প্রকল্প স্থাপন করেছিল। ওইসব প্রকল্পে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে চাষিরা দিশেহারা হয়ে গেছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন অনেক চাষি।

বাঁশখালী উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা উম্মুল ফারা বেগম তাজকিরা বলেন, বাঁশখালী পৌরসভা ও ১৪ ইউনিয়নে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ১৫০০ পুকুর ও ৭০টি চিংড়ি ঘেরে প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমাদের জরিপে দেখা গেছে, ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার মাছ, ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার চিংড়ি, ৫০ লাখ টাকার পোনা এবং ১০ লাখ টাকার পিএল ক্ষতি হয়েছে। আমরা মৎস্য চাষিদের মানসিকভাবে ভেঙে না পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ কাটিয়ে পুরোদমে ব্যবসা করার আহ্বান জানাচ্ছি।

পুঁইছড়ি ইউনিয়নের নাপোড়া গ্রামের বিছমিল্লাহ মৎস্য খামারের মালিক নুরুল আবছার বলেন, আল আরাফাহ ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা লোন নিয়ে মৎস্য খামার করেছি। কিন্তু পাহাড়ি ঢলে আমার ১২ লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে। এমনকি মৎস্য খামারের বিশাল অংশ পাহাড়ি ঢলে আসা বালিতে ভরে গেছে। এভাবে এলাকায় অসংখ্য চাষির ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখো গেছে, বাঁশখালীর পূর্বাঞ্চলের অধিকাংশ গ্রাম টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে গ্রামীণ বসতি, মৎস্যখাত ও ফসল ক্ষেত। কোটি কোটি টাকার মাছ ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ওইসব পাহাড়ি ঢল বাঁশখালীর পশ্চিমাঞ্চলে নিস্কাশিত হতে না পেরে বিস্তীর্ণ ধানী জমি ও ফসল ক্ষেতে এখনো আটকে আছে প্লাবিত পাহাড়ি ঢল। তীব্র গতির পাহাড়ি ঢলে ভেসে গেছে আস্ত গ্রামীণ রাস্তা, পুকুরের মাছ, ফসল ক্ষেত, ৩ শতাধিক ঘরবাড়ির নিম্নাংশের আংশিক অংশ।

বাঁশখালী পৌরসভার ৫টি পাড়া, নাপোড়া ৭টি পাড়া, চাম্বল, শীলকূপ, বৈলছড়ী, শেখেরখীলসহ বিভিন্ন এলাকার ৫ শতাধিক ঘরের বারান্দা ও উঠানের ওপর দিয়ে ৫/৬ ফুট করে প্লাবিত ঢলের ভয়ংকর তান্ডবের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠী।

Leave a Comment