রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তাজহাট থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া আলম ওরফে শিপলুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, তিনি চারটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি।
বুধবার যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক সরকার মাজহারুল মান্নানের নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় জাকারিয়া আলম বাদী।
গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় নগরীর দর্শনা মোড় রেলগেট এলাকার বাসা থেকে জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ রহমান জানান, কোতোয়ালি থানায় তিনটি ও তাজহাট থানায় একটিসহ চারটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় পুলিশ জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যায়। . এর মধ্যে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া মামলা দুটি এবং জমি দখল ও মারামারি সংক্রান্ত দুটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাকারিয়া গতকাল বিকেলে নগরের দর্শনা মোড় রেলগেট এলাকায় তার ফুফুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় জাকারিয়াকে গ্রেপ্তার করতে যায় পুলিশ। তবে গ্রেফতারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা পুরো বাড়ি ঘেরাও করে। এতে পুলিশ বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেয়। এদিকে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে, পাশাপাশি বাড়তে থাকে পুলিশের সংখ্যাও।
একপর্যায়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিকবার জাকারিয়ার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু নেতা-কর্মী ও এলাকাবাসীর বাধার মুখে তাও সম্ভব হয়নি। পরে নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের বাধার মুখে রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাকারিয়াকে আটক করে কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, সংবাদ প্রকাশের কারণে বুধবার যমুনা টেলিভিশনের সাংবাদিক সরকার মাজহারুল মান্নানের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আওয়ামী লীগ নেতা জাকারিয়া। আদালতের বিচারক আব্দুল মজিদ অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন স্থানীয় বাসিন্দা নূর মোহাম্মদ (৫৫) ও রংপুর সিটি করপোরেশনের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শফিউল ইসলাম শফি (৫০)।
মামলার অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, গত ১ এপ্রিল রাত ৯টায় যমুনা টেলিভিশনের অপরাধ তদন্ত অনুষ্ঠান ‘ক্রাইম সিন’-এ কাউন্সিলর জাকারিয়া আলমকে ভূমিদস্যু বলে, সরকারি দলের নামে সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে। বিভিন্ন অপরাধ সহ। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে কাউন্সিলর জাকারিয়ার মানহানি ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছে আসামিরা। একইসঙ্গে বর্তমান সরকার ও স্বাধীনতার সমর্থকদের ক্ষমতাকে দুর্বল ও বিভক্ত করতে অপপ্রচার চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে মামলা দায়েরের পরদিন গত বৃহস্পতিবার রংপুর সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন থেকে মামলা প্রত্যাহার ও আসামি জাকারিয়াকে গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়।