গতকাল বুধবার নির্বাচনী এলাকা নন্দীগ্রামে প্রচারণাকার্যে গিয়ে হামলার শিকার হোন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি৷
জানা যায়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হলদিয়ায় মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে নন্দীগ্রামে ফিরেন মমতা। সেখানে স্থানীয় কয়েকটি মন্দির পরিদর্শন করছিলেন। সন্ধ্যায় রেয়াপাড়া রাণিচকের একটি মন্দির থেকে বের হতে গিয়ে ভীড়ের মধ্যে হামলার শিকার হোন তিনি। অজ্ঞাতনামা ৪/৫জন হামলাকারী হঠাৎ তাকে ঘিরে ফেলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে মাথা, কপাল ও পায়ে আঘাত পান ৬৬ বছরের প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ।
হামলার পর পর ই তার দেহরক্ষীরা দ্রুত তাকে তুলে গাড়িতে উঠান। গাড়ি ছাড়ার পূর্বেই মমতা উপস্থিত সাংবাদিকদের আঘাতের স্থান দেখান, বলেন ‘ভীড়ের মধ্যে চার পাঁচ জন ঢুকে পড়েছিল। ধাক্কা মেরে ফেলে দেয় আমাকে। ইচ্ছাকৃত ধাক্কা মারা হয়। এর পিছনে অবশ্যই ষড়যন্ত্র ছিল।’ তিনি আরো অভিযোগ করেন হামলার সময় কোনো পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিল না।
এরপর দ্রুত তাকে কলকাতার পিজি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তাকে পর্যবেক্ষনের জন্য ৫ সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে ৪৮ ঘন্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। মমতা ব্যানার্জির এম আর আই করা হয়েছে। এক্সরে ও অন্যান্য পরিক্ষা করা হয়েছে। তিনি পায়ের গোড়ালি, ডান হাত, গলা ও ডান কাঁধে চোট পেয়েছেন। তার বাম পায়ে প্লাস্টার করা হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছেন হাসপাতালের প্রধান কর্মকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালে তার পাশে থাকছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অরুপ বিশ্বাস, ফিরহাদ হাকিমসহ তৃণমূলের অন্যান্য শীর্ষ নেতারা।
তবে মমতা ব্যানার্জির উপর হওয়া এ হামলাকে ‘নিছক দূর্ঘটনা’ ও ‘নির্বাচনপূর্ব সহানুভূতি আদায়ের কৌশল’ বলে দাবি করেছেন বিরোধীদল বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট অর্জুন সিংহ। নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর উপর কে হামলা করবে এমনটাই প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ও মমতার দ্রুত আরোগ্য কামনা করে টুইট করেছেন আম আদমি পার্টির নেতা ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, কংগ্রেস নেতা অভিজিত মুখার্জি ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তেজস্বী যাদব। তারা সকলেই জড়িতদের আটক ও বিচারের দাবি করেছেন।
এবারের ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম আসন থেকে লড়বেন মমতা ব্যানার্জি। প্রতিদ্বন্ধী একসময়ের ঘনিষ্ঠ সহচর ও শিষ্য শুভেন্দু অধিকারী। দীর্ঘদিন একত্রে কাজ করার পর গত ডিসেম্বরে শুভেন্দু যোগ দেন বিজেপিতে। নির্বাচন প্রচারণার শুরু থেকে একে অন্যকে পালটা আক্রমন করে বক্তব্য দিচ্ছিলেন তারা। তবে মমতার উপর হামলা নিয়ে মুখ খোলেন নি শুভেন্দু। শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী ও ভাই দিব্যেন্দু হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
Reporter: Nanjiba Naowar