দিনাজপুর জেল কারাগারে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে আদালতের বিচারে দন্ডিত ফাঁসির আসামী আইনী সকল কার্যক্রম শেষে আব্দুল হক নামে এক ব্যাক্তির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
দিনাজপুর জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন, আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তার জেল কারাগার সম্মুখে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতের লাশ পরিবারের কাছে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ড রায় কার্যকর করা ব্যাক্তি হলেন, আব্দুল হক (৪০) রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ভক্তিপুর চৌধুরীপাড়া এলাকার মৃত আছির উদ্দীনের পুত্র। গত ২০০২ সালের ২৮ আগস্ট থেকে তিনি স্ত্রী হত্যার মামলায় অভিযুক্ত হয়ে কারাগারে বন্দি রয়েছে। আদালতের রায়ে তার মৃত্যুদন্ড দন্ডিত করা হলে হাই কোর্টে তার রায়ের আপিল শুনানি শেষ হওয়ার পর তার রায় কার্যকর করার জন্য রংপুর জেল কারাগার থেকে দিনাজপুর জেল কারাগারে গত ২৬ মে পাঠানো হয়।
মৃত্যুদন্ডের রায় কার্যকর করার পুর্বে গতকাল বুধবার বিকাল ৪টায় নিহতের পরিবারের ১৫ সদস্য তার সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করেন এবং খাবার খাইয়ে ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে চলে যান। পরে গতকাল বুধবার রাত ১২টা ১মিনিটে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
ফাঁসির রায় কার্যকর করার সময় রংপুর জেল কারাগারে ডিআইজি (প্রিজন) আলতাফ হোসেন, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুছ, চিকিৎসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও জেলা কারাগারের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আব্দুল হক তার স্ত্রীকে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনে হত্যা করেন। এই ঘটনায় পরের দিন ৯ ফেব্রুয়ারি তার শাশুড়ি বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(ক) ধারায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
৫ বছর পরে ২০০৭ সালের ৩ মে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালত এর বিচারক আসামী আব্দুল হককে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করার রায় দেন। পরে আব্দুল হকের পরিবার হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে আপিল করলেও সেখানে সাজা বহাল থাকে।
সর্বশেষ আব্দুল হক রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন। গত ১৮ মে মামলাটির যাবতীয় বিবেচনায় রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর করলে ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ।