ভারতের উচ্চ আদালত এক নারীর আবেদনে সাড়া দিয়ে জানিয়েছেন, ১৫ দিনের জন্য ওই নারীর স্বামীকে প্যারোলে মুক্তি দেয়া হবে। ওই সময়ের জন্য গর্ভধারণের সুযোগ দেয়া হবে তাকে। আদালত মনে করেন, এটা তার অধিকার। এই অধিকার থেকে কোনো নারীকে আইন বঞ্চিত করতে পারে না।
মা হতে চান স্ত্রী। কিন্তু স্বামী জেলে বন্দী রয়েছেন। যাবজ্জীবন সাজা খাটছেন। এই অবস্থায় মাতৃত্বের অধিকার চেয়ে জোধপুর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন এক নারী। অবশেষে উচ্চ আদালত ১৫ দিনের জন্য ওই নারীর স্বামীকে প্যারোলে মুক্তি দিচ্ছেন।
একটি খুনের মামলায় নন্দলাল নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন রাজস্থানের ভিলওয়াড়া আদালত। বেশ কয়েক বছর তিনি জেলবন্দী। সম্প্রতি তার স্ত্রী রেখা জোধপুর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।
রেখার আবেদন, তিনি মা হতে চান। স্বামী জেলে থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। একজন নারীর সন্তান ধারণ প্রাথমিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। ওই নারীর দাবি যথাযথ বলে মনে করেন জোধপুর হাইকোর্টের বিচারপতি সন্দীপ মেহতা।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, নন্দলাল জেলে থাকার কারণে তার স্ত্রীর জীবনে প্রভাব পড়ছে। কিন্তু রেখা তো কোনো দোষ করেননি। ফলে আদালতের কাছে তার দাবির মান্যতা রয়েছে।
আদালত জানান, বংশ বিস্তার ও সংরক্ষণ ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় দর্শনের মধ্যে পড়ে। আইন তা নজরেও রেখেছে। প্যারোলে মুক্তি দেয়ার প্রেক্ষিতে আদালত হিন্দু শাস্ত্র, বিশেষত ঋগ্বেদ এবং ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্মের প্রসঙ্গ টেনেছেন। নন্দলাল প্যারোলের সুবিধা পেতে পারেন বলে জানান আদালত।
আদালত আরো জানান, একজন বন্দীকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার উদ্দেশ্য, শান্তিপূর্ণভাবে সমাজের মূল স্রোতে ফেরার ক্ষেত্রে তাকে পুনরায় উৎসাহী করা। অবশেষে সব দিক খতিয়ে দেখে জোধপুর হাই ৩৪ বছরের নন্দলালকে ১৫ দিনের জন্য মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০ দিন প্যারোল মঞ্জুর হয়েছিল নন্দলালের। সেই সময় ভালো আচরণের পাশাপাশি মেয়াদ শেষের পরে তিনি আত্মসমর্পণ করায় খুশি হয়েছিলেন আদালত।
সূত্র : আনন্দবাজার