রক্ষণশীল সৌদি আরবে নারীদের পরিস্থিতি ধীরে ধীরে বদলাচ্ছে। রাস্তায় গাড়ি চালানোর অনুমতিসহ নানা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হচ্ছে। দেশটিতে প্রথমবারের মতো উটের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় এবার নারীরাও তাঁদের উট নিয়ে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা তাদের ঘোড়ায় চড়ে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এর আগে দেশটিতে এমন ঘটনা ঘটেনি। এত দিন কিং আবদেল আজিজ উৎসবে সাধারণত পুরুষেরাই তাঁদের উট নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন।
রাজধানী রিয়াদ থেকে উত্তরাঞ্চলের রুমা মরুভূমিতে উটের সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া লামিয়া আল-রশিদি বলেন, ‘আমি আশা করি আজ একটি নির্দিষ্ট সামাজিক অবস্থানে পৌঁছতে পারব, ইনশা আল্লাহ।’
রশিদি বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই উটের প্রতি আগ্রহী। যখনই শুনলাম, নারীদেরও এ প্রতিযোগিতায় সুযোগ দেওয়া হয়েছে, আমিও অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলাম।’
নারীদের জন্য এই প্রতিযোগিতায় ৪০ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে শীর্ষ ৫ জন ২ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার পুরস্কার পেয়েছেন। মূলত এই প্রতিযোগিতায় প্রাধান্য পায় উট কতটা লম্বা, ঝুলে যাওয়া ঠোঁট, বড় নাক ও সুঠাম কুঁজ।
এর আগে গত ডিসেম্বর মাসে কয়েকজন প্রতিযোগীকে এ প্রতিযোগিতায় সুযোগ দেওয়া হয়নি। কারণ, তাদের উটের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে বিশেষ ইনজেকশন ব্যবহারের প্রমাণ মেলে।
অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আল-হারবি বলেন, ‘বেদুইন সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ নারী। তাঁদের কাছে উটের মালিকানা থাকে এবং উটের দেখাশোনাও করেন তাঁরা। এই উৎসবে নারীদের অংশগ্রহণ ঐতিহাসিক ঐতিহ্যকে রক্ষা করবে।’
আরেক নারী প্রতিযোগী মুনিরা আল-মিশকাস বলেন, ‘দীর্ঘকাল ধরেই উট আমাদের জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ। কিন্তু এবার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়াটা আমাদের নারীদের অনেক দূর এগিয়ে নেবে।’
গত মাসে শুরু হওয়া ৪০ দিনের এ অনুষ্ঠান বেদুইনদের বার্ষিক আয়োজন। অনুষ্ঠানে উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে বিভিন্ন প্রতিযোগী অংশ নেন। এ আয়োজনের পুরস্কারের মোট অর্থমূল্য ৬ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার।