সূর্যমুখী সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকার রহস্য সমন্ধে জানুন।
সূর্যের নাম নিয়ে ফুলের নাম রাখা হয়েছে সূর্যমুখী। সে যেন সব সময় সূর্যের দিকে মুখ করে রয়েছে। একেবারে ফোটা ফুলে এ ব্যাপারটি লক্ষ্য করা না গেলেও শীর্ষ কুঁড়িতে এটা নজরে আসে।
সূর্যমুখী ফুলের কুঁড়ি ভোর না হতেই পূর্ব দিকে তাকিয়ে থাকে। সূর্য ওঠার পরে সে সূর্যের আকাশ পথের দিকে মুখ করে মুখটাকে ওপর দিকে তোলে, মাঝ দুপুরে কুঁড়ি উর্ধ্ব পানে চেয়ে থাকে। বিকেলে কুঁড়ির মুখ আবার পশ্চিম দিকে। এ ভাবেই সারাদিন সূর্যের দিকে মুখ রেখে সূর্যমুখীর কুঁড়ি পূর্ব থেকে পশ্চিমে আপনাআপনি মুখ ঘুরিয়ে নেয়।
সূর্যমুখী ফুলের কুঁড়ি কেন এভাবে সারাদিন সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকে?
সূর্যমুখী ফুলের এই ব্যবহারের ব্যাখ্যা অনেকদিন পর্যন্ত কেউ দিতে পারেননি। শেষে অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে বিজ্ঞানীরা এই ব্যাপারে একটি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
প্রাণীদের মত গাছেরও সব রকমের কাজকর্ম হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। গাছের অঙ্গের বৃদ্ধির জন্য এক ধরণের হরমোন দরকার হয়, যাকে বলে অক্সিন। কুঁড়ির তলায় যে পাতা থাকে এই হরমোন তা ভেতরে তৈরি হয়। এবং তৈরি হওয়ার পর তা ফুলের বোঁটায় চলে আসে।
এখন যেদিকে সূর্যের আলো পড়ে তার উল্টো দিকে হরমোন বেশি জমা হয় এবং সেই দিকেই কোষের বৃদ্ধি হয় বেশি করে। ফলে স্বাভাবিক ভাবে বেশি চাপের ফলে কুঁড়ি উল্টো দিকে মুখ করে থাকে। অর্থাৎ সকালবেলায় পূর্ব দিকে সূর্য উঠলে ফুলের ডাঁটাটি পশ্চিম দিকটায় বেশি বড় হয়। ফলে কুঁড়ির মুখ তখন পূর্ব দিকে। বিকেলে ঠিক এর উল্টোটা ঘটে।
পরিণত সূর্যমুখী ফুলে আবার এই নিয়মের শিথিলতা লক্ষ্য করা যায়। তার কারণ হলো-
পরিণত ফুলে ডাঁটির কোষগুলোও পরিণত হওয়ায় হরমোন আর তেমন কাজ করতে পারে না। ফলে পরিণত সূর্যমুখী ফুলে এই ধরণের আচরণ পরিলক্ষিত হয় না। কেবল সূর্যমুখী ফুলের কুঁড়িতেই এই ব্যাপারটা নজরে আসে।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।