Close Menu
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী
    • Home
    • Rangpur
    • International
    • Islamic
    • Life Style
    • Insurance
    • Health
    Facebook X (Twitter) Instagram
    রংপুর ডেইলী
    International

    সুপেয় পানির জন্য ঘরে ঘরে সংগ্রাম

    নিজস্ব প্রতিবেদকBy নিজস্ব প্রতিবেদকApril 5, 2022Updated:January 25, 2024No Comments5 Mins Read
    Default Image

    খুলনার দাকোপ উপজেলা সদর থেকে ১৭ কিলোমিটার দক্ষিণে সুতারখালী বাইনপাড়া গ্রাম। ঘূর্ণিঝড় আইলার পর গ্রামটির মানচিত্র বদলে গেছে। নলিয়ান নদীর গর্ভে ভিটেমাটি হারিয়ে অনেকটা ভেতরে এসে মানুষ বসতি গড়েছেন। সেখানকার এবড়োখেবড়ো মাটির রাস্তার ঠিক পাশে রূপা বেগমের ঘর। তপ্ত দুপুরে জগে দড়ি বেঁধে পানি তুলছিলেন তিনি। তবে পুকুর, ট্যাংকি বা সাধারণ কুয়া থেকে নয়; রূপা পানি তুলছিলেন ‘বস্তার কুয়া’ থেকে।সাত সদস্যের পরিবারের খাওয়ার পানির একমাত্র ভরসা ওই বস্তার কুয়া। রোদ–বৃষ্টিতে প্রায় নষ্ট হয়ে যাওয়া বিচিত্র এ সংরক্ষণাগারের পানিকে সুপেয় বলা যায় না। তবু এর ওপর ভরসা করে কয়েকটা মাস ‘নির্ভাবনায়’ কাটে পরিবারটির।

    রূপা বেগম বলছিলেন, ‘গরিব মানুষ। ট্যাংকি কেনার টাকা নেই। ঘরে ছোট বাচ্চা আবার আমার কিডনির সমস্যা ধরা পড়ল। বাড়িওয়ালা (গৃহকর্তা) বাইরে কাজে যায়। পানি আনার চরম সমস্যা বাধল। অনেক চিন্তা করে কাঠমিস্ত্রি স্বামী এ পদ্ধতি বের করেছে।’সেখানে দেখা যায়, সমতল মাটিতে চারটি কাঠের টুকরা পোঁতা। সেগুলো আবার বাঁশের চট দিয়ে গোল করে ঘিরে দেওয়া। চটের গায়ে পরানো হয়েছে জিও বস্তার কাপড়। তার মধ্যে সেলাই করে পলিথিন দেওয়া। টিনের ছোট্ট চাল থেকে কাঠ দিয়ে তৈরি একটা পাইপের মাধ্যমে পলিথিনের ভেতরে বৃষ্টির পানি জমা হয়েছে। সেই পানিও একবারে শেষের পথে। কয়েক দিনের মধ্যে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহের সংগ্রাম শুরু হবে পরিবারটির।

    কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন এনজিও এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) নামমাত্র টাকা রেখে ছোট–বড় প্লাস্টিকের ট্যাংকি দিচ্ছে। তবে এ সুবিধার বাইরে থেকে যাচ্ছে প্রচুর পরিবার।রূপাদের মতো সুন্দরবনসংলগ্ন এ জনপদের মানুষ বছরজুড়েই লোনা পানির সঙ্গে নিরন্তর লড়াই চালায়। ফাল্গুনের শুরু থেকে জ্যৈষ্ঠের মাঝ পর্যন্ত পানীয় জলের সংকট তীব্র হয়। অগভীর বা গভীর নলকূপ এখানে অকার্যকর। বৃষ্টি ও পুকুরের পানিই ভরসা। অনেকে টাকা দিয়ে পানি সংগ্রহে বাধ্য হন। মানুষ বর্ষার শুরু থেকে আশ্বিনের মাঝামাঝি পর্যন্ত সরাসরি বৃষ্টির পানি পান করেন। এরপর কিছুদিন চলে জমিয়ে রাখা বৃষ্টির পানি দিয়ে। তবে বেশির ভাগ পরিবারের পানি জমিয়ে রাখার বড় পাত্র বা ট্যাংকি নেই। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন এনজিও এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (ডিপিএইচই) নামমাত্র টাকা রেখে ছোট–বড় প্লাস্টিকের ট্যাংকি দিচ্ছে। তবে এ সুবিধার বাইরে থেকে যাচ্ছে প্রচুর পরিবার।

    জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র বলছে, সুপেয় পানির সংকটের বড় কারণ লবণাক্ততা। উপজেলার বাজুয়া ইউনিয়ন বাদে কোথাও ভূগর্ভে পানযোগ্য পানির স্তর না পাওয়ায় গভীর নলকূপ চালু করা যায় না। অগভীর নলকূপের পানিতে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা ও আর্সেনিক দূষণ। পানির চাহিদা পূরণের জন্য পুকুর ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ হচ্ছে ভরসা। প্রায় দুই লাখ মানুষের এ উপজেলায় সব মিলিয়ে ৫০টির মতো সরকারি পুকুর আছে। অনেকগুলো কাজে আসে না। গত তিন বছরে সরকারিভাবে তিন হাজার ট্যাংক দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এনজিও আরও চার-পাঁচ হাজার ট্যাংক দিয়েছে। বৃষ্টির পানির সংরক্ষণের জন্য নতুন করে কয়েকটি প্রকল্প পাস হয়েছে।

    অসুস্থতার জন্য কাঁখে কলসি নিতে কষ্ট হয়। আবার ঘরে দুটি সন্তান প্রতিবন্ধী। চলতে ফিরতে এমনকি এক গ্লাস পানি নিয়েও খেতে পারে না। ওদের রেখে যাওয়াটাও অনেক কষ্টের।সুতারখালীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জাকিয়া বেগমের পরিবারে কোনো ট্যাংক নেই। চার কিলোমিটার দূরের পুকুর থেকে খাওয়ার পানি আর এক কিলোমিটার দূর থেকে রান্নার পানি আনতে হয়। অসুস্থ থাকায় মাসখানেক ধরে পানি কিনে খাচ্ছেন। জাকিয়া জানান, আইলায় লোনাপানির তোড়ে এলাকার বহু পুকুর ভেসে যায়। এরপর থেকেই সংকট গভীর হয়েছে। সামর্থ্য না থাকলেও তিনজনের পরিবারে পানির পেছনে মাসে খরচ কম করে হলেও ৩৫০ টাকা।

    একটি এনজিও থেকে দুই হাজার লিটারের একটা ট্যাংক পেয়েছেন সুতারখালী মল্লিকপাড়া গ্রামের সেলিনা বেগম। তাতে পুরো বছরের পানির চাহিদা না মিটলেও তিনি খুশি। নতুন ট্যাংকে এখনো পানি ধরতে পারেননি। বিভিন্ন ছোট পাত্রে ধরে রাখা বৃষ্টির পানি আর লিটার তিরিশেক আছে। তাতে আরও তিন দিনের মতো চলবে। এরপর তিন কিলোমিটার দূরের আলিয়া মাদ্রাসা পুকুর থেকে পানি আনতে হবে। সেলিনা বলেন, অসুস্থতার জন্য কাঁখে কলসি নিতে কষ্ট হয়। আবার ঘরে দুটি সন্তান প্রতিবন্ধী। চলতে ফিরতে এমনকি এক গ্লাস পানি নিয়েও খেতে পারে না। ওদের রেখে যাওয়াটাও অনেক কষ্টের। এখন বৃষ্টি হলে পানি ধরতে পারবেন। না হলে কষ্ট বাড়বে।

    সেলিনা ট্যাংকটি পেয়েছেন জিসিএ প্রকল্প থেকে। জমা দিতে হয়েছে তিন হাজার টাকা। খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলের প্রায় সাত লাখ নারী ও কিশোরীর জন্য জলবায়ু অভিযোজন ও সহিষ্ণুতা বাড়াতে ওই প্রকল্পের কাজ চলছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) যৌথভাবে এটি বাস্তবায়ন করছে। বিশ্বের বৃহত্তম জলবায়ু তহবিল গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড (জিসিএফ) প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা করছে। প্রকল্পের আওতায় দাকোপে ৯৮০টি বসতবাড়িতে দুই হাজার লিটারের ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে।মাটির ওপর পাকা ভিত করে বসানো হয়েছে ট্যাংক। ওপরে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে ট্যাংকের সঙ্গে যোগ করা হয়েছে দুই ধরনের ফিল্টার।

    স্থানীয় লোকজন বলছেন, এ পানির ব্যবস্থাপনা নিয়েও নানা ঝামেলা হয়। তবে ব্যবস্থাপনার ঝক্কি কমাতে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কাজ করছেন ‘পানি আপারা’। জিসিএর দেওয়া পানির স্থাপনাগুলো সচল রাখার জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে একজন করে পানি আপা নির্বাচন করা হয়েছে। নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে রক্ষণাবেক্ষণ সেবা ও পরামর্শ প্রদান করছেন তাঁরা।বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানির ট্যাংক দেখাশোনার কাজ করেন ‘পানি আপা’ আলেয়া বেগম। সম্প্রতি খুলনার দাকোপের সুতারখালী এলাকায়বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানির ট্যাংক দেখাশোনার কাজ করেন ‘পানি আপা’ আলেয়া বেগম। সম্প্রতি খুলনার দাকোপের সুতারখালী এলাকায় ।আলেয়া বেগম তেমনি একজন ‘পানি আপা’। রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে সুতারখালীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১৬২টি পরিবারে তিনি সেবা দিচ্ছেন। এ সেবার মধ্যে আছে ফিল্টার ও ট্যাংক পরিষ্কার। পাশাপাশি পাইপ ফিটিংসের মতো ছোটখাটো কাজও করেন তিনি। এ ছাড়া গ্রাহকদের নিরাপদ পানির গুরুত্ব, নিরাপত্তা পরিকল্পনা ও উৎসের রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করছেন।

    এসব কাজের জন্য আলেয়া প্রতি পরিবার থেকে মাসে পান ২০ টাকা করে। এতে মাসে তাঁর তিন হাজার টাকার কিছু বেশি আয় হয়।রেহানা বেগম নামের এক নারী বলেন, ‘ট্যাংকের কোনো ধরনের অসুবিধা হলে পানি আপারা ঠিক করে দিয়ে যান। ফিল্টার পরিষ্কার করে দেন। প্রতি মাসে এসে দেখে যান। এতে আমরাও ভরসা পাই।’জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দাকোপের উপসহকারী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, অধিকাংশ জিনিস নষ্ট হচ্ছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। ‘পানি আপারা’ সেবার পাশাপাশি উদ্বুদ্ধকরণেও কাজও করছেন। একদিকে সেবা দেওয়া যাচ্ছে, আবার অন্যদিকে জীবিকার একটা ব্যবস্থাও হচ্ছে। তাঁদের ক্ষমতায়নের জন্য ইউনিয়ন বা ওয়ার্ডের পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কমিটিতেও জায়গা দেওয়া হবে।

    নিজস্ব প্রতিবেদক
    • Website

    নিজস্ব প্রতিবেদক বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরাসরি তথ্য সংগ্রহ করে পাঠকের কাছে সঠিক ও নির্ভরযোগ্য সংবাদ পৌঁছে দেয়। তারা ঘটনার প্রকৃত তথ্য ও বিশ্লেষণ তুলে ধরে যাতে পাঠক বিস্তৃত ও স্বচ্ছ ধারণা পেতে পারেন। নিজস্ব প্রতিবেদকদের লক্ষ্য হলো দ্রুত এবং নিখুঁত প্রতিবেদনের মাধ্যমে সমাজে তথ্যের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

    Related Posts

    Awakening a Nation: How the Bangladesh 2024 Revolution Inspires Global Change

    November 20, 2024

    গণহত্যার অভিযোগ চীন

    February 3, 2024

    ইসলামকে দুর্বল করে ফেলতে ইবলিস কি কি চক্রান্ত করছে?

    July 5, 2023
    Leave A Reply Cancel Reply

    সাম্প্রতিক
    • সুস্থ যৌনজীবনের জন্য জরুরি ১০টি পরামর্শ
    • গর্ভাবস্থায় মা ও শিশুর যত্নের সম্পূর্ণ গাইড
    • ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীর ও মনকে সুস্থ রাখার কৌশল
    • ডিপ্রেশন মোকাবিলায় প্রাকৃতিক সমাধান
    • ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা
    • শিশুদের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করার উপায়
    • শীতকালে সুস্থ থাকার ৭টি টিপস
    • গরমে সুস্থ থাকার জন্য করণীয় ও বর্জনীয়
    • শরীরের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব
    • মানসিক চাপ কমিয়ে সুস্থ থাকার কৌশল
    • শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়
    • চোখের সুস্থতা বজায় রাখার ঘরোয়া টিপস
    • হার্টের যত্নে কোন খাবার বেশি খাবেন
    • উচ্চ রক্তচাপ কমানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি
    • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার সহজ উপায়
    • প্রেমে একে অপরকে সময় দেওয়ার গুরুত্ব
    • দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে নতুন করে সাজানোর কৌশল
    • প্রেমে আস্থা নষ্ট হলে কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন
    • সোশ্যাল মিডিয়ায় রিলেশনশিপ পরিচালনার টিপস
    • প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে রাগ কমানোর ৫টি পদ্ধতি
    Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.