চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে ফরিদপুরে সিজারে সন্তান জন্মদান করাতে গিয়ে নবজাতকের কপাল কেটে ফেলেছেন নার্স ও আয়া। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার সকালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
রোগীর স্বজনরা অভিযোগ দিলে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে চায়না বেগম নামের ওই নার্স, হাসপাতালের পরিচালক পলাশ ও এক দালালকে আটক করে। এই ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার মইজুদ্দিন মাতব্বর পাড়ার শফিক খানের স্ত্রী প্রসূতি রুপা বেগমকে শনিবার ভোরে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।
সকালে হাসপাতালটিতে কোনো লোক না পেয়ে অপেক্ষায় থাকে পরিবারটি। পরে দালালদের প্ররোচনায় পার্শ্ববর্তী আল-মদিনা প্রাইভেট হাসপাতালে প্রসূতিকে ভর্তি করে তারা।
সেখানে চিকিৎসক ছাড়াই প্রসূতি মায়ের পেট থেকে নবজাতক বের করতে গিয়ে শিশুটির কপালের একটি অংশ কেটে ফেলেন নার্স ও আয়ারা।
প্রসূতির পরিবার থানায় ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন। পরে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ও কোতয়ালী থানা পুলিশ হাসপাতাল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পেলে হাসপাতালের পরিচালক, আয়া ও দালালকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এই ঘটনায় প্রসূতির পরিবার আল-মদিনার হাসপাতালর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
আহত নবজাতকের ফুপু হোসনেয়ারা অভিযোগ করে বলেন, সকাল ৮টার দিকে ওই প্রাইভেট হাসপাতালের চায়না বেগম ও দুজন আয়া চিকিৎসক ছাড়াই প্রসূতির পেট থেকে বাচ্চা বের করতে গিয়ে শিশুটির কপালের একটি অংশ কেটে রক্তাক্ত করে ফেলে। পরে দ্রুত বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গিয়ে নয়টি সেলাই দেওয়া হয় নবজাতকের।
ইউএনও মো. মাসুদুল আলম বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে হাসপাতাল থেকে তিনজনকে আটক করেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য বিভাগকে আমরা বলেছি।’
ফরিদপুর সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফাতেমা করিম বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এ ধরনের উদাসীনতা মেনে নেওয়া হবে না।
ফরিদপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন কর বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক, আয়া ও এক দালালকে আটক করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’