অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত দ্রুত শেষ করে তাঁর ন্যায়বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন আর্টিকেল নাইনটিন। এ ছাড়া ঔপনিবেশিক আমলের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিলেরও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও নির্যাতনের এক বছর পূর্ণ হয়েছে ১৭ মে। এ উপলক্ষে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সল এক বিবৃতিতে বলেন, আর্টিকেল নাইনটিন মনে করে, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ক্ষেত্রে নাগরিকদের তথ্য অধিকার খর্বকারী এই আইনের চরম অপব্যবহার হয়েছে।
গত বছর এই দিনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রায় ছয় ঘণ্টা আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতন করা হয়। একই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে শাহবাগ থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাঁর বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এক সপ্তাহের মাথায় গত বছরের ২৩ মে তিনি জামিনে ছাড়া পান। এরপর থেকে তিনি আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছেন।
আর্টিকেল নাইনটিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এক বছর পেরিয়ে গেলেও রোজিনার বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত এখনো শেষ হয়নি। তিনি এখনো অনিশ্চয়তা ও ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এমন একটি আইনের অধীন, যা কখনোই একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা উচিত ছিল না। কারণ, এই আইন তথ্য অধিকারকে খর্ব করে এবং সংবিধানে প্রদত্ত স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারের সরাসরি বিরোধিতা করে।
করোনাকালে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম তুলে ধরে মামলার শিকার হন রোজিনা ইসলাম। তবে সাহসী সাংবাদিকতার জন্য গত বছর নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামভিত্তিক সংস্থা ফ্রি প্রেস আনলিমিটেড তাঁকে ‘ফ্রি প্রেস অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ দিয়েছে। তিনি পুরস্কারটি পেয়েছেন সেরা অদম্য সাংবাদিক বা মোস্ট রেজিলিয়েন্ট জার্নালিস্ট শ্রেণিতে। মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য লড়াই করা সাংবাদিকদের এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ২০২০ সালে একই পুরস্কার পেয়েছিলেন শান্তিতে নোবেল পাওয়া ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা।