সাংবাদিকেরাও সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসবেন বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘সমাজের সব মানুষ এই পেনশন সুবিধার আওতায় আসবেন, সাংবাদিকেরাও আসবেন। সাংবাদিকেরা এর আওতায় আসার ক্ষেত্রে প্রতিটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষের একটি দায়দায়িত্ব আছে এবং থাকবে।’আজ মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খানের পরিচালনায় দ্য ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ওমর ফারুক, সাধারণ সম্পাদক দীপ আজাদ, সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য প্রমুখ সভায় বক্তব্য দেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘সাংবাদিকেরা পেনশনের দাবি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এমন একটি যুগান্তকারী ব্যবস্থার ঘোষণা যা ইউরোপীয় সমাজকল্যাণমূলক রাষ্ট্রে রয়েছে, পত্রিকার পাতায় দেখলাম বিএনপি নেতারা সেটি নিয়েও সমালোচনা করছেন।’সবকিছু নিয়ে সমালোচনা করার বাতিক থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে পারেনি’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে ঘোষণা দিয়েছেন, সেটিতে আপনাদের কোনো “সাজেশন” থাকলে বলুন। সেই পরিকল্পনা যখন প্রকাশ করা হবে, সেখানে কোনো ভালো “সাজেশন” থাকলে অবশ্যই গ্রহণ করা হবে। কিন্তু এ রকম একটি ভালো উদ্যোগের কেন সমালোচনা করছেন? সবকিছুতেই না বলার যে বাতিক, সেটাই তাদেরকে পেয়ে বসেছে, তা থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছে না। আশা করব, তারা এই না বলা রোগ থেকে মুক্তি পাক।’
সাংবাদিকেরা মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে পারেন। যে মানুষটি স্বপ্ন দেখতে ভয় পান, তাঁকেও সাংবাদিকেরা স্বপ্ন দেখাতে পারেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যাঁরা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেন এবং হুমকির সম্মুখীন হয়েও সমাজে অবহেলিত, উপেক্ষিত মানুষকে নিয়ে লেখেন, আমি তাঁদেরকে “স্যালুট” জানাই। কারণ, এ ধরনের রিপোর্ট দরকার। এ ধরনের রিপোর্ট সমাজকে পথ দেখায় এবং দায়িত্বশীলদের আরও দায়িত্ববান হতে তাগাদা দেয়। গণমাধ্যমে আজকে যে অগ্রগতি সেটি এবং কোনো অসংগতি থাকলে সেটিও তুলে ধরুন। আমাদের সরকার সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করে।’
গণমাধ্যম জগতে বিরাজমান কয়েক দশকের পুঞ্জীভূত বিশৃঙ্খলা দূর করে ধীরে ধীরে আমার চেষ্টায় অনেক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেছেন বিদেশি টিভির ক্লিনফিড বা বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার কখনোই সম্ভব নয়, সেটি হয়েছে। সংবাদপত্রে অষ্টম ওয়েজবোর্ড অনেকে বাস্তবায়ন করেছে, আবার অনেকেই করেনি। নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের ব্যাপারে সাংবাদিক ইউনিয়ন সোচ্চার আছে। আমি মনে করি যে সবার নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করা উচিত। আমরা এ নিয়ে কাজ করব।’
বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট-বিসিটিআই জার্নালের বঙ্গবন্ধু সংখ্যার মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সচিব মো. মকবুল হোসেন এবং বিসিটিআইয়ের প্রধান নির্বাহী মো. আবুল কালাম আজাদ। মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।