প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ আদালতে বাংলায় রায় লেখা শুরু হয়েছে। এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে আলাদা শাখা চালু হয়েছে।’
সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সাধারণ মানুষ ও বিচারপ্রার্থীরা যাতে আদালতের রায় বুঝতে পারে, সে জন্য ইংরেজিতে দেওয়া রায় বাংলায় অনুবাদ করতে সুপ্রিম কোর্টে যুক্ত হয়েছে নতুন সফটওয়্যার ‘আমার ভাষা’। বলা হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওই সফটওয়্যারটি দিয়ে রায়গুলো বাংলায় অনুবাদ করা যাবে। ’
তিনি বলেন, আজকের দিনে আমাদের মহান ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আর তারা যে চেতনা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সেদিন ভাষার জন্য শহীদ হয়েছিলেন, আমাদেরও সেই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।
দেশে নিম্ন আদালতে বেশির ভাগ রায় ও আদেশ দেওয়া হয় বাংলায়। এখন উচ্চ আদালতেও দিন দিন বাংলায় রায় ও আদেশ দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
১৯৮৭ সালে বাংলা ভাষা প্রচলন আইন প্রবর্তন করা হয়। আইনটি পাস হওয়ার পর থেকেই সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের সব দাপ্তরিক আদেশ ও নির্দেশনা বাংলাতে হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত উচ্চ আদালতের কটি আদেশ ও রায় বাংলায় দেওয়া হয়েছে, সুনির্দিষ্টভাবে সে তথ্য জানা যায়নি।
জানা গেছে, প্রয়াত বিচারপতি এ আর এম আমীরুল ইসলাম চৌধুরী নব্বইয়ের দশকের শুরুতে হাইকোর্টে বাংলায় আদেশ দেওয়া শুরু করেন। এরপর সাবেক বিচারপতিদের মধ্যে কাজী এবাদুল হক, হামিদুল হক, আবদুল কুদ্দুছ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী বেশ কয়েকটি রায় বাংলায় দেন।
এখন উচ্চ আদালতে রায় ও আদেশ বাংলায় দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে বলে জানান আইনজীবী ও বিচারালয়-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। হাইকোর্ট বিভাগের তিনজন বিচারপতি নিয়মিত বাংলায় রায় ও আদেশ দিয়ে থাকেন। একজন বিচারপতি কয়েক বছর ধরে ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বাংলায় রায় ও আদেশ দেন।
এ ছাড়া ১০ থেকে ১৪ জন বিচারপতি বিভিন্ন সময়ে বাংলায় রায় ও আদেশ দিয়েছেন। গত বছর আপিল বিভাগ এক মামলায় বাংলায় রায় দেন।