ভোজ্য তেলের আমদানিনির্ভরতা কমাতে সয়াবিন, সরিষাসহ তেলজাতীয় শস্যের উৎপাদন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রয়োজনে তেলবীজ উৎপাদনে আরও গবেষণা করতে হবে। এ জন্য কৃষকদের উৎসাহ দিতে হবে। মূলত ভোজ্য তেল আমদানি কমিয়ে দেশেই সয়াবিন, সূর্যমুখী, বাদামসহ বিভিন্ন তেলবীজ উৎপাদন বাড়াতে একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন।’
মন্ত্রী জানান, সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভোজ্য তেল আমদানি কমিয়ে উৎপাদনে যেতে হবে। দেশে উৎপাদনে যেতে হলে সয়াবিন ও সূর্যমুখীর চাষ করতে হবে। এ জন্য বেশি বেশি সয়াবিন ও সূর্যমুখীর চাষ করতে বলেছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া অন্য অনুশাসনের কথা তুলে ধরে এম এ মান্নান বলেন, ‘এখন থেকে বাংলাদেশের কোথাও নতুন সেতু তৈরি হলে তার নিচ দিয়ে নৌকা চলাচলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী সৈয়দপুর ও চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর রেলওয়ে কারখানার সক্ষমতা বাড়াতে বলেছেন বলেও জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বালাতে পারাকে সরকারের একটি বড় সাফল্য হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি বড় সাফল্য যে, আমরা প্রতিটি ঘরে আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছি। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’
সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর দীর্ঘদিন ধরে সরকার পরিচালনা করায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা এ ধরনের সাফল্যের আরেকটি কারণ। প্রধানমন্ত্রী বারবার তার দলকে ভোট দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে দেশ পরিচালনার সুযোগ দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।
বিদ্যুৎকে শিল্পায়নের চালিকাশক্তি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের অনেক চর এলাকায় নদী এবং সাগরের তলদেশ দিয়ে যেমন সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যেখানে গ্রিড লাইন নেই সেখানে সোলার প্যানেল দিয়ে যেমন বিদ্যুৎ দিয়েছি তেমনি সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে মূল বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। যাতে সেখানে শিল্পায়ন হতে পারে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় উপকূলীয় অঞ্চলে সবাইকে বেশি করে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে সবুজবেষ্টনী গড়ে তোলার এবং কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ তৈরির আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, প্রকৃতির প্রতিশোধ খুব কঠিন, কাজেই প্রকৃতি কীভাবে এটা করে সেটা আমি নিজের চোখেই দেখেছি বহুবার। তারপরও আমি বলব মানুষের সুরক্ষার যে বিষয়, সেটা আমরা নিশ্চিত করেছি এবং গতকাল আমি বলেছি সবাই গাছ লাগাবেন।