প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এখনো সময় আছে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।’ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে স্বাধীনতা দিবসের র্যালির উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। র্যালি আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বিএনপি। র্যালিটি নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে বিজয়নগর, পল্টন মোড় হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে সকালে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুস্পার্ঘ অর্পণ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
বিকেল ৩টায় র্যালি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১১টার পর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড, থানা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ঢোল-তবলা বাজিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হতে থাকেন। নেতাকর্মীদের হাতে ছিল জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত পোস্টার ও ব্যানার। র্যালিতে অংশগ্রহণ করা নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে স্লোগান দেন। বিএনপির র্যালি উপলক্ষে সকাল থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। বেলা পৌনে ৪টার দিকে মির্জা ফখরুল যখন র্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করেন তখন ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, বিজয়নগর সড়ক নেতাকর্মীদের পদচারণায় পূর্ণ হয়ে যায়।
র্যালির আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার র্যালির মধ্য দিয়ে এ অবৈধ সরকারের কানে আমরা যে বাণী পৌঁছে দিতে চাই, সেটা হচ্ছে তোমার দিন শেষ। দয়া করে এখন ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় সব ডিক্টেটর, সব স্বৈরাচারি, সব ফ্যাসিবাদের যে পরিণতি হয়েছে আপনাদেরও সেই একই পরিণতি হবে।’তিনি বলেন, ‘বিএনপির ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমাদের ছয় শ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে। প্রায় হাজারের ওপর নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা নেই। নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করার স্বাধীনতা নেই। আজকে আমাদের অর্থনীতি ধ্বংসের পথে চলে গেছে। চাল, ডাল, তেলের দাম এত বৃদ্ধি পেয়েছে যে সাধারণ মানুষ আর কিনতে পারে না। গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দামও হু হু করে বাড়ছে। আবার নাকি নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়াবে।’তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য রুখে দাঁড়াতে হবে। যদি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হয়, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হয়, তাহলে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করে এ সরকারকে পরাজিত করতে হবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি’র আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য-সচিব আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহববুব উদ্দিন খোকন, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।