একদিন চলে যাবো ঐ দূর মেঘে;
সায়াহ্নের আবছা আলোতে মুদে যাবে দু’চোখ।
তামামদিন ভালো না লাগার প্রজাপতিরা পাবে মুক্তির স্বাদ।
বিষাদমাখা আঁখি জোড়া আর সিক্ত হবে না;
স্ফটিকের ন্যায় সাদা জলের উল্লাস থেমে যাবে।
স্থির হয়ে যাবে বন্ধ চোখের মণি।
বিরক্তের আতিশয্যে আর ভ্রু কুঞ্চিত হবে না জননীর,
বাবা ফেলবে স্বস্তির দীর্ঘ নিঃশ্বাস।
বোনের চোখ ভিজবে।
প্রিয়ম শিয়রে দাঁড়িয়ে নির্বাক চেয়ে থাকবে;
তাকে জ্বালানোর মানুষটার বিচ্ছেদে হয়তো তার হৃদপিণ্ড ছেঁড়া কষ্ট হবে,
অথবা আজন্ম মুক্তির আনন্দশ্বাসে আমার কপালে লেপ্টে থাকা একগুচ্ছ চুল সরে যাবে।
স্বজনদের দু’একজন হয়তো আবেগের বশে চোখ মুছবে।
ক্ষণিকের পরিচয়ে আপন করে নেয়া বোন দুটি ভেজা চোখে শেষবারের মত বিদায় জানাবে।
নিজ হাতে কাফন পরিয়ে বড় ফুপি হঠাৎ ডুকরে কেঁদে উঠবে।
আমি আমার খুব পছন্দের সাদা রং আর সুরমা রাঙানো চোখে চার পায়া খাটলিতে উঠব। যাত্রা শুরু হবে সাড়ে তিন হাত মাটির নিচে।
কি আশ্চর্য! আমাকে পুঁতে ফেলতে সবার কত আয়োজন।
আমার ভাঁজ না হওয়া বিছানা, পরিপাটি বুকসেল্ফ, কুশনে লুকানো মশারি, অর্ধেক শেষ হয়ে যাওয়া মেহেদি, প্যাঁচানো ইয়ারফোন, লালরঙা ঘড়ি, আলমারির বিশেষ তাক, সার্বক্ষণিক সঙ্গী মুঠোফোন, টেবিলের কোণে রাখা চশমা, আধখোলা বই।
সব এক নিমিষে অতীত হয়ে যাবে। আর
অতীত হয়ে যাব আমি ও আমার কন্ঠস্বর।
|| শূণ্যতা ||
-মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া
০৪.০৫.২০২৩