সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চল ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে চারটি অঞ্চল বাদে সারা দেশেই বৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকটি অঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে।
কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। অব্যাহত বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আভাস বহাল আছে। দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোয়ও ৩ নম্বর সতর্কসংকেত বহাল আছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ সন্ধ্যা ৬টা পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
তবে এই ২৪ ঘণ্টা পরবর্তী ২ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
সারা দিন মেঘলা আকাশের পর রাজধানীতে টানা বৃষ্টি হয়। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, ঢাকা, ২৯ জুলাই।
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার আগের ২৪ ঘণ্টায় চারটি অঞ্চল ছাড়া সারা দেশেই বৃষ্টি হয়েছে। তার মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে মোংলায় ২৫৩ মিলিমিটার। তারপর ফেনী ১৯৫, চট্টগ্রামে ১৪০, সাতক্ষীরায় ১৩৬, কুতুবদিয়ায় ১১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
কক্সবাজারে ৯২, টেকনাফে ৮৪, খেপুপাড়ায় ৮৩, সীতাকুণ্ডে ৮০, পটুয়াখালীতে ৭৩, কুমিল্লায় ৬১, মাইজদীকোর্টে ৫৮, যশোরে ৫৭, সন্দ্বীপে ৫৪, ঢাকায় ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সময়ে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বৃষ্টি হতে পারে। অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টি মূলত ২৬ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে। তারপর ২৭ জুলাই লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছে। সেই লঘুচাপটি আজ নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। দেশে এখন যে বৃষ্টি হচ্ছে তা মূলত এই নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বর্তমানে নিম্নচাপ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আছে। বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে বেশি প্রভাব পড়েছে।
সন্ধ্যায় আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়ে আজ দুপুর ১২টায় বাংলাদেশের খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চল ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, স্থল নিম্নচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে ও গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।