শিশুদের জন্য বিকল্প খেলার মাঠের সন্ধান না দিলে কলাবাগানের মাঠে থানা ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ (বেলা) সমিতির প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এই মাঠরক্ষার আন্দোলনে সক্রিয় হওয়ায় রোববার ১৩ ঘণ্টা কলাবাগান থানায় আটকে রাখা হয় ওই এলাকার বাসিন্দা সৈয়দা রত্না ও তাঁর কলেজপড়ুয়া ছেলেকে।
রোববার সকাল ১১টার দিকে এই মা–ছেলেকে ধরে নিয়ে যায় কলাবাগান থানা পুলিশ। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে স্কয়ার হাসপাতালের উল্টো দিকের ওই মাঠে যান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ মানবাধিকারকর্মীরা। পরে রাতে স্থানীয়দের সঙ্গে কলাবাগান থানার সামনে অবস্থান নিয়ে মা–ছেলের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
তাঁদের বিক্ষোভের মুখে রাত সাড়ে ১২টার দিকে থানা থেকে মুক্তি পান সৈয়দা রত্না ও তাঁর ছেলে। এ সময় সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিশুদের জন্য বিকল্প খেলার মাঠের সন্ধান না দিলে ওই মাঠে থানার ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না।’
তিনি বলেন, ‘জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে পুলিশ রত্না আপা ও তাঁর ছেলেকে যেভাবে ছেড়ে দিয়েছে, তেমনি ওই মাঠে থানার ভবন নির্মাণ থেকে পুলিশ সরে আসবে বলে আমি আশা করছি। ওই এলাকায় শিশুদের জন্য খেলার মাঠ একটিই। বিকল্প মাঠের সন্ধান না দিলে সেখানে থানার ভবন নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। এজন্য আন্দোলন চলবে।’
এর আগে মাঠ রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমরা একটা অপরাধী সমাজ চাই না। তাই দেশের প্রতিটি এলাকায় শিশু-কিশোরদের খেলার মাঠ দরকার। মাঠের জায়গায় থানা করে অপরাধ কমানো যাবে না। বেশি করে মাঠ থাকলেই অপরাধ কমবে।’
পান্থপথের স্কয়ার হাসপাতালের উল্টো দিকের খোলা জায়গাটি তেঁতুলতলা মাঠ হিসেবে পরিচিত। সেখানে স্থানীয় শিশুরা খেলাধুলা করে। পাশাপাশি মাঠটিতে ঈদের নামাজ, জানাজাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান হয়।
এই মাঠে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই এর প্রতিবাদ করছেন স্থানীয় লোকজন।
মাঠটি রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী গত ৪ ফেব্রুয়ারি পান্থপথের কনকর্ড টাওয়ারের সামনে মানববন্ধন করেন। ‘কলাবাগান এলাকাবাসী’র ব্যানারে আয়োজিত ওই কর্মসূচিতে স্থানীয় শিশু-কিশোর ও স্থানীয় বাসিন্দারা অংশ নেন। এতে মানববন্ধনের সংগঠকদের অন্যতম ছিলেন সৈয়দা রত্না।
রত্নার মেয়ে শেউঁতি শাহগুফতা বলেন, রোববার সকালে কলাবাগানের ওই মাঠটিতে ইট-সুরকি ফেলা হয়। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভ করেন তাঁর মা। এক পর্যায়ে সকাল ১১টার দিকে তাঁর মা ও ভাইকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ।