তখন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) কেবল শিক্ষা কার্যক্রমই চালু রাখেনি, শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতার হাতও বাড়িয়েছে করোনা সংক্রমণের কারণে যখন সারা দেশের শিক্ষাব্যবস্থা প্রায় অচল, । তবে আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও করোনায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
রংপুর ডেইলীকে খবর থেকে জানা যায়, অন্যান্য উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বুয়েটও অনলাইন ক্লাস চালু করে করোনার কারণে সরাসরি শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার পর। , তারা অনলাইন শিক্ষার নামে শিক্ষার্থীদের ফাঁকি দেয়নি; শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে কিন্তু অন্যদের থেকে বুয়েটের পার্থক্য হলো । শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে ভার্চ্যুয়াল ফরম পাঠায় এবং এতে কার কী চাহিদা, তা পূরণ করতে বলে এ উদ্দেশ্যে তারা নিজস্ব অনলাইন সিস্টেম থেকে । তবে এসব ফরম পাওয়ার পর কর্তৃপক্ষ চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মুঠোফোন ও ল্যাপটপ কেনার জন্য সুদহীন ঋণ দেয় । পরিশোধেরও সিদ্ধান্ত নেয় প্রতিষ্ঠানটি উচ্চগতির ইন্টারনেটের সংযোগের বিল ।
আর্থিক অবস্থা সমান নয় সব শিক্ষার্থীর । নিজের পড়াশোনার খরচ চালান অনেকে টিউশনি করেও । পড়াশোনার খরচ জোগাড় করেন আবার কেউ কেউ অন্য খণ্ডকালীন কাজ করেও । ৫ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে অনলাইনে নিজস্ব ই-মেইলে দেওয়া ফরমের মাধ্যমে জরিপ চালানো হয় সবার কথা চিন্তা করে । কোন শিক্ষার্থীর ইন্টারনেট সংযোগ কেমন এর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। ভালো স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ আছে কি না । তবে ইন্টারনেট কেনার সামর্থ্য আছে কি না । তাঁদের অনলাইনে ক্লাস করার মতো ভালো যন্ত্র নেই ৩৭০ শিক্ষার্থী জানান, । ৩০ হাজার করে টাকা দেয় বুয়েট সেসব শিক্ষার্থীকে অনলাইন আবেদনের ভিত্তিতে বিনা সুদে । তবে এভাবে শতভাগ শিক্ষার্থীকে স্মার্টফোন ও ল্যাপটপের আওতায় নিয়ে আসা হয় । তাদের প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয় যেসব শিক্ষার্থীর ক্লাস করতে গেলে ইন্টারনেটের ডেটা কিনতে সমস্যা ছিল । তবে ১ হাজার ৮০০ শিক্ষার্থী এ সুবিধা পেয়েছেন। তবে তিনটি মুঠোফোন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজ চালু করে ৬২৫টি সিম দেওয়া হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের, যাতে তাঁরা ফ্রি ক্লাস-পরীক্ষা দিতে পারেন।
৩ হাজার ৫০০ টাকা ও যাঁদের পরিবারের কেউ আক্রান্ত, তাঁদের ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হয়। মোট ৪৬৯ শিক্ষার্থীকে এ সেবার আওতায় আনা হয় যেসব শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁদের । বিনা সুদে ১৩৩ শিক্ষককে ৪৫ হাজার টাকা করে দেয় একই সঙ্গে শিক্ষকদেরও ভালো যন্ত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষ । তবে এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের টিকা পেতেও সহায়তা করে।আর বুয়েটের ২ হাজার ১২০ জন শিক্ষার্থী ইতিমধ্যে টিকা নিয়েছেন।
কত শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকল, কতজন থাকল না, তা নিয়ে মাথা ঘামায়নি, তখন বুয়েটের এ উদ্যোগ শুধু প্রশংসনীয় নয়, অনুসরণীয়ও বটে যখন অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নামকাওয়াস্তে অনলাইন ক্লাস চালু করেছে । তবে এটা মানতে হবে যে অনেক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বেশি, সামর্থ্য কম । তবে চেষ্টা করলে তারা বুয়েটের মতো শতভাগ না হলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থীকে অনলাইন ক্লাসে নিয়ে আসতে পারত । করোনাকালে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে সেরা সেবাটাও দিতে পারে এতে প্রমাণিত হলো বুয়েট দেশের অন্যতম সেরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই নয়। তবে স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন আসে, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস চালু রাখতে শিক্ষার অভিভাবক হিসেবে বিবেচিত শিক্ষা মন্ত্রণালয় কী করেছে?