ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করায় রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে পশ্চিমা দেশগুলো। সে কারণে রাশিয়ার প্রায় অর্ধেক স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বিভিন্ন দেশে জব্দ হয়ে আছে। এত দিন একের পর এক সম্পদ জব্দের তথ্য এলেও রাশিয়ার পক্ষ থেকে মোট পরিমাণ জানানো হয়নি। তবে অবশেষে এ নিয়ে মুখ খুলেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানভ। খবর আরটির।
রুশ অর্থমন্ত্রী আন্তন সিলুয়ানভ বলেন, ‘আমাদের মোট রিজার্ভের পরিমাণ প্রায় ৬৪০ বিলিয়ন (৬৪ হাজার কোটি) মার্কিন ডলার। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ বিলিয়ন (৩০ হাজার) ডলার রিজার্ভ এখন আমরা ব্যবহার করতে পারছি না।’ রোববার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য জানান তিনি।পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করে রুশ অর্থমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়াকে বিশ্বের সবচেয়ে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত দেশ বানিয়েছে পশ্চিমারা। কিন্তু এতে রাশিয়ার মনোবল নষ্ট হবে না।
সিলুয়ানভ বলেন, ‘পশ্চিমা মিত্ররা রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সীমিত করার জন্য এখন চীনের ওপর চাপ দিচ্ছে। যাতে করে চীনা ইউয়ানে লেনদেন করার ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রবেশাধিকার বাধাগ্রস্ত হয়। কিন্তু আমি মনে করি, চীনের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্ব এখনো অনেক মজবুত। চীন থেকে আমরা যে সহযোগিতা পেয়েছি, তা বজায় থাকবে। বরং এটি আরও বৃদ্ধি পাবে। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কাজে আসবে না।’রাশিয়াকে ‘একঘরে’ করার জন্য আন্তর্জাতিক লেনদেনব্যবস্থা সুইফট (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন) থেকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ ছাড়া দেশে দেশে রাশিয়ার মালিকানাধীন বেশ কিছু সম্পদও জব্দ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশটির মোট রিজার্ভের প্রায় অর্ধেকই এখন অকার্যকর অবস্থায় আছে।
অবশ্য রাশিয়াও তার অর্থনীতিকে সচল রাখার উপায় খুঁজতে কাজ করছে। রাশিয়ান ব্যাংকগুলোর জন্য সুইফটের বিকল্প হিসেবে দেশটি এখন চায়নিজ ক্রস বর্ডার ইন্টার ব্যাংক পেমেন্ট সিস্টেমকে (সিআইপিএস) ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া গ্রাহকদের অর্থ লেনদেনে সুবিধা দিতে চীনা মুদ্রা ইউয়ানে সঞ্চয় অ্যাকাউন্ট খোলার পরামর্শ দিয়েছে দেশটির একাধিক ব্যাংক।