ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক জোট ন্যাটো যেন রাশিয়ার বশীভূত হয়ে আছে। বারবার অনুরোধ জানানো হলেও ইউক্রেনে নো-ফ্লাই জোন তথা বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা ঘোষণা দিতে রাজি হয়নি ন্যাটো। সে কারণে এই হতাশা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের।আজ মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এবং যুক্তরাজ্য নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ‘জয়েন্ট এক্সপিডিশন ফোর্স’–এর অন্যান্য সদস্যদেশের নেতাদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া এক বক্তব্যে জেলেনস্কি ন্যাটো নিয়ে এই হতাশা জানান। তিনি বলেন, ন্যাটো বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী জোট। কিন্তু জোটের কিছু সদস্য রাশিয়ার আগ্রাসনে বশীভূত হয়ে আছে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে অনেক কথা শুনছি, যেন ন্যাটো রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমানের জন্য ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ করে দিলেই তা শুরু হয়ে যাবে। সে কারণে এখনো এখানে মানবিক নো–ফ্লাই জোন ঘোষণা করা হয়নি।’ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, নো–ফ্লাই জোন না হওয়াটা রুশ বাহিনীকে শান্তিপূর্ণ শহরগুলোতে বোমাবর্ষণের সুযোগ করে দিচ্ছে। তারা আবাসিক ভবন, হাসপাতাল ও স্কুলগুলো গুঁড়িয়ে দিচ্ছে। আজ ভোরে কিয়েভে চারটি বহুতল ভবনে বোমাবর্ষণ করা হয়েছে, অনেকে নিহত হয়েছেন।রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর থেকে ইউক্রেনের আকাশসীমায় নো–ফ্লাই জোন ঘোষণা করতে ন্যাটোসহ পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর নেতারা তাতে সাড়া দেননি। তাঁরা বলছেন, এটা করা হলে পরমাণু শক্তিধর একটি দেশের সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া হবে, যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে মোড় নেবে।
রাশিয়ার পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, নো–ফ্লাই জোন শুধু ইউরোপ নয়, পুরো বিশ্বের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। যদি কোনো দেশ নো–ফ্লাই জোন বাস্তবায়নের দিকে যায়, তাহলে ধরা হবে তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দিয়েছে।ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা আজ মঙ্গলবার ২০তম দিনে গড়িয়েছে। এদিন সকাল থেকে রাজধানী কিয়েভের বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলা হয়েছে। একাধিক বহুতল আবাসিক ভবনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় অন্তত দুজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।এই পরিস্থিতিতে বড় হামলার শঙ্কায় কিয়েভে ৩৫ ঘণ্টার জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে। কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো বলেছেন, আজ একটি কঠিন ও বিপজ্জনক মুহূর্তের মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা।