যুক্তরাজ্যের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে বলা হতো বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী। তিনি এখন নেই, তবু তাঁর সম্পদের পরিমাণ নিয়ে মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। তবে রীতি অনুযায়ী, রানির সম্পদের হিসাব গোপন রাখা হবে। এমনকি মৃত্যুর আগে তাঁর সম্পদের ভাগ–বাঁটোয়ারা নিয়ে রানির শেষ ইচ্ছা (উইল) কী ছিল, তা–ও প্রকাশ করা হচ্ছে না। খবর এনডিটিভির
সম্পদের মূল্য নির্ধারণকারী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘ব্র্যান্ড ফাইন্যান্স’–এর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ব্র্যান্ড মূল্য ছিল ৮ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার। আর মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস বলছে, বিনিয়োগ, শিল্পসামগ্রী, অলংকার ও আবাসন খাত মিলিয়ে শুধু রানি এলিজাবেথের সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার।
রানি এলিজাবেথের ছোট বোন প্রিন্সেস মার্গারেটের উইল নিয়ে আইনি লড়াইয়ের সময় যুক্তরাজ্যের একটি আদালতে বলা হয়েছিল, রাজকীয় উইলগুলো প্রকাশ্যে না আনার মূল কারণ হলো রাজা বা রানির গোপনীয়তা রক্ষা করা। এ ছাড়া আইনি কারণেও রানি এলিজাবেথকে অন্যদের মতো উইল প্রকাশ করা লাগবে না।
এদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম সানডে টাইমস–এর প্রকাশিত দেশটির শীর্ষ ধনীদের তালিকা থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালে রানির সম্পদের পরিমাণ ছিল ৩৪ কোটি পাউন্ড। এ অর্থের প্রধান উৎস ছিল ‘ডাচি অব ল্যাঙ্কাস্টার’ (ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ব্যক্তিগত সম্পদের উত্তরাধিকারী) হওয়ায় তাঁর আয় থেকে।
ঐতিহাসিকভাবেই যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের কারোর উইলের তথ্য শুধু পরিবারটির অন্য সদস্যদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। ডাচি অব ল্যাঙ্কাস্টার হিসেবে আয়ের অর্থ রানির পরবর্তী উত্তরাধিকারী হিসেবে যিনি রাজক্ষমতায় আসবেন, তিনি সরাসরি পেয়ে যাবেন। এ অর্থের ওপর কোনো করও দেওয়া লাগবে না। রানি এলিজাবেথের প্রয়াণের পর তাঁর উত্তরাধিকারী হয়েছেন বড় ছেলে তৃতীয় চার্লস। এরই মধ্যে গত শনিবার তিনি ব্রিটেনের নতুন রাজা হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। এরপর দায়িত্ব পালন করবেন তৃতীয় চার্লসের বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়াম।
টাইমস–এর তথ্যমতে, ১৯৯৩ সালে তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী জন মেজরের নেতৃত্বাধীন সরকার একটি চুক্তি করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল, রানির উত্তরাধিকারীর কাছে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পত্তি হস্তান্তরের জন্য কোনো কর দেওয়া লাগবে না। এমনকি রাজক্ষমতায় থাকা দুজনের মধ্যে সম্পত্তি হস্তান্তরের উইলও উত্তরাধিকার করের আওতার বাইরে থাকবে। যদিও রানি আয়কর দিতে রাজি হয়েছিলেন।
রাজপরিবারের সম্পদের ওপর কর আরোপ নিয়ে ২০১৩ সালে করা এক সমঝোতা স্মারকে বলা হয়েছে, পরবর্তী রাজা বা রানির কাছে সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে কর না নেওয়ার কারণ হলো, স্যান্ডরিংহ্যাম ও বালমোরালের মতো ব্যক্তিগত সম্পত্তিগুলো সরকারি ও ব্যক্তিগত—দুই কাজেই ব্যবহার করা হয়। আর ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন রাজকীয় কাজ চালিয়ে যেতে রাজতন্ত্রের যথেষ্ট পরিমাণ ব্যক্তিগত সম্পদের প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া সরকারের কাছ থেকে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পেতেও এই সম্পদের প্রয়োজন।
এদিকে রানি এলিজাবেথের ছোট বোন প্রিন্সেস মার্গারেটের উইল নিয়ে আইনি লড়াইয়ের সময় যুক্তরাজ্যের একটি আদালতে বলা হয়েছিল, রাজকীয় উইলগুলো প্রকাশ্যে না আনার মূল কারণ হলো রাজা বা রানির গোপনীয়তা রক্ষা করা। এ ছাড়া আইনি কারণেও রানি এলিজাবেথকে অন্যদের মতো উইল প্রকাশ করা লাগবে না।