গণপরিবহন ব্যবস্থায় শিথিলতা আনার পরই যেন মানুষের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াতের ঢল নেমেছে। আইন অমান্য করে চলছে দূরযাত্রার যানবাহন৷ ফেরি ঘাটে নেই কোনো স্বাস্থ্যবিধি মানার বিন্দুমাত্র লক্ষণ। মানুষের সাথে মানুষ যেন পাল্লা দিয়ে লঞ্চে উঠছে। যাত্রী উঠানোর ক্ষেত্রে নেই কোন নিয়ম নীতি। ‘সীমিত আকারের যাত্রী পরিবহন নীতি ‘ এই কথা শুধু নামমাত্র। জনসাধারণের মধ্যেও নেই কোনো সচেতনতা। করোনা ভাইরাস বলতে যে এক ভয়ংকর মহামারী সারা পৃথিবীতে বিরাজ করছে তা যেন কারোরই মনে নেই।
মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে গত দুই দিন ধরে মানুষ দেখছে এরকম দৃশ্য। হাজার হাজার মানুষের উপচে ভরা ভীড়, জনস্রোত। ঈদ উদযাপনের জন্য মানুষের গ্রামের বাড়ি যাওয়ার হিড়িক। প্রধানমন্ত্রী যদিও সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্য বলেছিলেন, “যে যেখানে আছেন সেখানেই এবার ঈদ করুন “। কিন্তু তা কেউ কানেই নেয় নি বলতে গেলে। তবে লকডাউনে কাজ হারানো নিম্নশ্রেণীর মানুষেরা শহরে থাকবেই বা কি করে। রোজগার নেই, নেই সংসার চালানোর সামর্থ্য। আর যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশই এই শ্রেণীর মানুষ। তাদের পক্ষে আসলেই শহরে জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে বলেই তারা দলে দলে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হচ্ছে।
তবে ফেরিঘাটে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হওয়া যেন ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ। তাই এরকম পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয় তাই রবিবার ( ৯ মে) থেকে ফেরিঘাটে বিজিবি মোতায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রশাসন। ঢাকা শহর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষজনের যাতায়াত বন্ধ করতেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ( বিজিবি) মোতায়ন করা হবে বলে জানায় প্রশাসন। ইতোমধ্যে মাওয়া ফেরিঘাট এবং ধলেশ্বরী ব্রিজে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়ন করা হয়েছে। ভাইরাসের উর্ধ্বগতি ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যা কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে।
মানিকগঞ্জ জেলার প্রশাসক এ বিষয়ে বলেন, “জেলার তিনটি স্থানে বিজিবি চেকপোস্ট থাকবে, যাতে কেউ সে জেলার ভেতরে কিংবা বাইরে যেতে না পারে। ” তবে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক লাশ বহনকারী গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, পণ্যবাহি গাড়ি পারাপারের জনয় নির্দিষ্ট কিছু ফেরি চলাচল অব্যাহত থাকবে।