রঙের সঙ্গে ঠান্ডা গরম লাগার সম্পর্ক আছে কি?
গরমের দিনে দুপুর রোদে টকটকে লাল রঙের জামা পরে কেউ রাস্তা দিয়ে হাঁটলে, তাকে দেখলেই যেন কেমন গরম গরম লাগে, তাই না?
কিছু কিছু রং যেমন- লাল, হলুদ, কমলা গরম রং বা ওয়ার্ম কালার বলে পরিচিত। আর নীল, সবুজ, ধূসর প্রভৃত রং কে বলে ঠান্ডা রং বা কুল কালার।
ঘরের দেয়ালের রং হলুদ রাখলে ঘরটা কেমন যেন গরম মনে হয়, তেমনি যে ঘরের দেয়ালের রং হালকা নীল তার ভেতর কেমন একটা ঠান্ডার আমেজের আভাস মেলে।
সত্যি কি লাল রঙের সাথে গরম লাগার আর নীল রঙের সঙ্গে ঠান্ডা লাগার কোন সম্পর্ক আছে?
আসলে এখন পর্যন্ত রঙের সঙ্গে তাপমাত্রার কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় নি। রঙের সঙ্গে তাপমাত্রার কোনো সম্পর্ক আদৌ আছে কিনা ত বোঝার জন্য নান ধরণের পরীক্ষাও করা হয়েছে।
একটি পরীক্ষায় একটি ঘরে বেশ কয়েকজনকে একের পর এক ঢুকে কাজ করতে বলা হয়। ঘরে আলোর রং পাল্টানোর ব্যবস্থা ছিল। প্রথমে দুটো ঠান্ডা রং আর পরে দুটো গরম রঙের আলো এক এক করে ঘরে জ্বেলে দেওয়া হয়। সবাইকে বলা হলো ঘরের আলোর রংয়ের সঙ্গে তাপমাত্রার সম্পর্ক আছে। কাজেই যখন তাদের খুব বেশি গরম লাগবে আর কাজ করতে অস্বস্তি হবে তারা যেন সংকেতে তার নির্দেশ দেন।
আসলে ঘরের ভেতর গরম হাওয়া প্রবাহিত করে তাপমাত্রা পাল্টানোর ব্যবস্থা ছিল। প্রত্যেকে যখন শারীরিক অস্বস্তি হচ্ছে জানিয়ে সংকেত করেন, তখনকার তাপমাত্রা আর বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ নোট করে রাখা হয়।
পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায় যে, আলোর সঙ্গে বেশি গরম লাগার কোন সম্পর্ক নেই। সবাইকে যখন উষ্ণতার মাত্রা অনুযায়ী আলোর রং গুলোকে সাজাতে বলা হয় তখন তারা লাল ও হলুদকে গরম আর নীল ও সবুজকে ঠান্ডা বলে চিহ্নিত করেন। এই তালিকার সঙ্গে সবচেয়ে গরম লাগার সময়ের আলোর রঙে কোন মিল পাওয়া যায়নি।
তবুও মানুষের মনের ব্যাপারটাও কম গুরুত্বের নয়। তাই এখনও ঠান্ডার জায়গায় গারো উজ্জ্বল রংয়ের পোষাকের এবং গরমের জায়গায় হালকা রঙের পোশাক পরার চলই বেশি।
কিন্তু সত্যি হলো যে, এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। তবে কালো আর সাদা রঙের বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা।
কালো রং তাপ শোষণ করে বেশি আর সাদা রং সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে দেয়। তাই গরমের সময় সাদা রঙের পোশাক আর ঠান্ডার জায়গায় কালো রঙের পোশাক পড়ার যথেষ্ট বৈজ্ঞানিক যুক্তি আছে।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।