রংপুর একটি সম্ভাবনাময় ও প্রগতিশীল বিভাগ!!!
প্রায় ১৬,১৮৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের রংপুর বিভাগ বর্তমান সময়ের অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ও উন্নয়নশীল একটি বিভাগ বলে গন্য করা হয়। প্রায় ১৫.৭৯ মিলিয়ন মানুষের বসবাস এই বিভাগে। এটি ২০১০ সালের ২৫ জানুয়ারী বাংলাদেশের সপ্তম বিভাগ হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এর পূর্বে রংপুর রাজশাহী বিভাগের অধীনে ছিল।
৮টি জেলা এবং ৫৮টি উপজেলা নিয়ে রংপুর বিভাগ গঠিত।বিভাগ হিসেবে একটু হলেও দেরিতে স্বীকৃতি পেলেও শিক্ষা, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বানিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সামাজিক, অর্থনৈতিক, সকল ক্ষেত্রেই রংপুর বিভাগের স্বয়ংসম্পূর্ণতা লক্ষ করা যায়। রংপুর বিভাগের মধ্যে শুধুমাত্র রংপুর জেলাতেই শিক্ষা ও স্বাক্ষরতার বিপুল প্রসারের জন্য রয়েছে প্রচুর সংখ্যক মান সম্মত ও আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ও জনপ্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলো হলো রংপুর কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারি মেডিকেল কলেজ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর জিলা স্কুল, রংপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর ক্যাডেট কলেজ, মিলেনিয়াম স্কুল এন্ড কলেজ, রংপুর পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, পুলিশ লাইন স্কুল এন্ড কলেজ ইত্যাদি।
রংপুর একটি সম্ভাবনাময় ও প্রগতিশীল বিভাগ!!!
এছাড়াও রংপুর শহরের বাহিরে দিনাজপুরে অবস্থিত হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ, সৈয়দপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, হলিক্রস স্কুল এন্ড কলেজ, ঠাকুরগাঁও জিলা স্কুল, খোলাহাটি ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
একটি পরিপূর্ণ বিভাগ হিসেবে গঠিত হওয়ার জন্য সবরকম যোগ্যতা ও সম্ভাবনাই রংপুর বিভাগের মধ্যে বিদ্যমান। উত্তরাঞ্চলের যে সকল জেলা নিয়ে রংপুর গঠিত তা হলো, রংপুর জেলা, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারি, গাইবান্ধা, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাট। উল্লেখিত প্রত্যেকটি জেলারই সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবকাঠামো সুগঠিত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ। বিশেষ করে কৃষিকাজের লক্ষ্যমান প্রচার ও প্রসারের জন্য নিয়মিত ভাবে এসব এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটে চলেছে ।
এছাড়াও রংপুর বিভাগের রয়েছে উন্নত ও আধুনিক সড়ক, রেল ও আকাশপথের যোগাযোগ ব্যবস্থা।যার ফলে রাজধানী ঢাকা ও দেশের অন্যান্য সকল প্রান্তের সাথে খুব সহজেই যাতায়াত সম্পন্ন হয়ে থাকে। সর্বমোট ২১ টি রেল এক্সপ্রেস রয়েছে যা দেশের বিভিন্ন জায়গাকে রংপুরের সাথে কানেক্ট করে। রয়েছে রেল জাংশন পার্বতীপুর রেল স্টেশন। এছাড়াও দেশের যে মোট ৩ টি অভ্যন্তরীন এয়ারপোর্ট রয়েছে তার মধ্যে একটি সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট এই রংপুর বিভাগেই অবস্থিত।
স্বয়ং রংপুর জেলাতে বর্তমানে খুব উন্নত ও আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা সুবিধা থাকার কারণে তা সমগ্র উত্তরাঞ্চলের জেলা গুলোতে ভালো পরিচিতি লাভ করেছে। সেখানে প্রায় শ’খানেক হাসপাতাল, প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার পুরো শহর জুড়ে রয়েছে যা উত্তরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসাসেবায় অভাবনীয় ভূমিকা রেখে চলছে।
ইতিহাস ও সংস্কৃতিতেও পিছিয়ে নেই এই বিভাগ। টুরিস্ট প্লেস রয়েছে অনেকগুলো যেগুলোতে সারাবছরই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ঘুরতে আসে এবং এখানকার আঞ্চলিক শিল্প সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হয়। উল্লেখযোগ্য কিছু জায়গা হলো, তাজহাট প্যালেস, কান্তজীর মন্দীর, পিকনিক স্পট ভিন্ন জগত, স্বপ্নপূরী, রংপুর চিড়িয়াখানা, তেতুলিয়া চা বাগান, বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, তিস্তা ব্যারেজ, রংপুর টাউন হল, বেগম রোকেয়া মেমোরিয়াল সেন্টার ইত্যাদি।
এছাড়াও উত্তরাঞ্চলের চোখ জুড়ানো সবুজ ও সতেজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ত রয়েছেই। যা পর্যটকদের মন আকর্ষণ করে ও শান্তির পরশ এনে দেয়। শহরের যান্ত্রিক জীবনে যখন মানুষ হাপিয়ে উঠে তখন এই সুন্দর আধো গ্রাম্য, আধো শহুরে , কৃষিপ্রধান অঞ্চল গুলোতে বেরিয়ে যায়।
রংপুর বিভাগের আর একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এখানে তামাক চাষ বিখ্যাত। অনেক কৃষক জীবিকা নির্বাহের তাগিদে তামাক আবাদ করে। যদিও এই আবাদ অস্বাস্থ্যকর কিন্তু অন্য ফসলে লোকসান হওয়ায় অনেক কৃষক ঝুকে পড়েছেন তামাক চাষে। তবে তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে নিয়মিত সভা, সেমিনারের আয়োজন করা হয় এখন।
রংপুর বিভাগ এর রয়েছে ফাস্ট ক্লাস ক্রিকেট টিম যা ‘রংপুর ডিভিশন ক্রিকেট টিম’ হিসেবে পরিচিত। আর বিপিএল এর রংপুর অধীনের টিম হলো সাবেক চ্যাম্পিয়ান টিম ‘রংপুর রাইডারস’।
সম্ভাবনাময় এই বিভাগটি যে একদিন দেশের প্রথম সারির বিভাগ হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে তা আর বলতে বাকি নেই! শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।
Reporter : Progga