প্রচণ্ড গরম উপেক্ষা করে বিভিন্ন বয়সী মানুষকে আনন্দের খোঁজে রংপুরে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে ছুটে চলতে দেখা গেছে। বুধবার রংপুরের ভিন্নজগৎ, তাজহাট জমিদারবাড়ি, চিড়িয়াখানা, কালেক্টরেট সুরভি উদ্যান, চিকলি পার্ক, প্রয়াস সেনা পার্ক, কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া এলাকায় তিস্তা নদীর পারসহ প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রই মানুষের পদচারণে ছিল মুখর।
ঈদের দিন ও ঈদের দ্বিতীয় দিন বুধবার বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রে শিশু ও নারীর উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মতো। ঈদের দিন বিকেলে শহর থেকে চার কিলোমিটার দূরে সেনাকল্যাণ পার্ক ‘প্রয়াস’-এ দেখা যায় গাছের ছায়ায় মানুষজন বসে আছে। বিনোদনকেন্দ্রের ঘাট নদের পারে পরিবারের সদস্যরা দল বেঁধে ঘোরে।
ঢাকা থেকে ঈদ করতে আসা শহরের রাধাবল্লভ এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল বশির স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে এসেছেন। তিনি বললেন, ‘ঈদের ছুটিতে বিনোদন পেতে একটি দিনও মিস করা যাবে না। কেননা ঢাকায় হচ্ছে বন্দিজীবন। আর এখানে মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা।’
বুধবার সকালে কাউনিয়ায় তিস্তা সেতু এলাকায় দেখা যায়, যন্ত্রচালিত বড় নৌকায় করে নদীর বুকে ঘুরছেন অনেকে। কেউ কেউ হাঁটছেন নদীর পার দিয়ে। তিস্তা সেতু এলাকায় সংস্কৃতিকর্মী নুরুজ্জামান শেখ তাঁর সন্তানদের নিয়ে নির্মল বাতাস পেতে ছুটে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘এভাবে একসঙ্গে পরিবার নিয়ে আনন্দ করার মজাই আলাদা। সেই সঙ্গে নানা বয়সের মানুষজন দেখে মনটাও ভরে যায়।’
বুধবার নগরের চিড়িয়াখানায় শিশুদের সঙ্গে মা-বাবা ও স্বজনদের হাত ধরে ঘুরতে দেখা যায়। ঢাকা থেকে ঈদ করতে বাড়িতে এসে সন্তানদের নিয়ে ঘুরতে এসে আনন্দ লাগছে বলে জানালেন ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘রংপুরে যেভাবে বিনোদনের জন্য ঘুরছি, তা হয়তো ঢাকা কিংবা অন্য জায়গায় হয়ে ওঠে না। সন্তানেরা আনন্দ পাচ্ছে, এটিই বড় পাওয়া।’
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সবুজ চত্বর ও জিলা স্কুলের বিশাল মাঠেও শিশু-কিশোরদের ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। জিলা স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জিয়াউর রহমান বলেন, এত বড় দিগন্তজোড়া মাঠে ক্রিকেট উৎসব দেখতে ছুটে এসেছেন অনেকেই। মুক্ত বাতাসে বসে শ্বাস নেওয়ার আনন্দই আলাদা।
প্রতিটি বিনোদনকেন্দ্রে জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে জানালেন অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদাপোশাকে পুলিশ সদস্যরা টহলে আছেন।