আমাদের দেহকে সুস্থ রাখতে হলে নিয়মিত মূত্রত্যাগ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।প্রতিদিন আমরা সাধারণত ০.৫ লিটার থেকে ২.৫ লিটার মূত্রত্যাগ করে থাকি।এই পরিমাণটি স্বাভাবিক।তবে অনেক ক্ষেত্রে আমাদের প্রাত্যাহিক মূত্রের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।এটি কিন্তু একটি রোগ।এই রোগটিকে বলা হয় ডাইইউরেসিস।
অর্থাৎ, আমাদের কিডনীতে মূত্র উৎপাদনের পরিমাণ যখন দিনে ৩ লিটারের চেয়েও বেশি হয় তখন তাকে বলা হয় ডাইইউরেসিস বা মূত্রবর্ধন রোগ।
তিন ধরনের ডাইইউরেসিস রয়েছে-
১.পানি ডাইইউরেসিস
২.অসমোটিক ডাইইউরেসিস
৩.চাপ ডাইইউরেসিস
★পানি ডাইইউরেসিস
আমরা যখন অতিরিক্ত পানি পান করি তখন আমাদের কিডনীতে অধিক পরিমাণে মূত্র উৎপন্ন হয়।একে বলা হয় পানি বা ওয়াটার ডাইইউরেসিস।সাধারণত অতিরিক্ত পানি গ্রহণ করার ১৫ মিনিটের মধ্যে এটি শুরু হয় এবং সর্বোচ্চ ৪০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হয়।এক্ষেত্রে এন্টিডাইইউরেটিক হরমোনের অনুপস্থিতি বা স্বল্পতার জন্য অতিরিক্ত মূত্র তৈরী হয়ে থাকে।
ডায়াবেটিস ইনসিপিডাস নামক রোগ হলে এমন ঘটনা ঘটে থাকে।
★অসমোটিক ডাইইউরেসিস
অতিরিক্ত পরিমাণে অশোষিত অসমোটিকভাবে সক্রিয় পদার্থের উপস্থিতির কারণে যখন বেশি মূত্র তৈরী হয় তখন তাকে বলে অসমোটিক ডাইইউরেসিস।
এক্ষেত্রে মূত্রের অসমোলারিটি ৩০০ মিলিঅসমোল/লিটার এর চেয়ে বেশি থাকে।আর এখানে পানির পুনঃশোষণও কমে যায়।
সাধারণত ডায়াবেটিস মেলাইটাস,রেনাল ফেইলার,হাইপারটেনশন,সেরিব্রাল ইডিমা রোগ হলে অসমোটিক ডাইইউরেসিস হয়ে থাকে।
★চাপ ডাইইউরেসিস
যখন গড় সিস্টেমিক রক্তচাপ ২০০ মিলিমিটার মার্কারীর চেয়ে বেশি হয় তখন এরূপ মূত্রবর্ধন হয়ে থাকে।এক্ষেত্রে মূত্রের আয়তন স্বাভাবিকের চেয়ে ৭-৮ গুন বেশি হয়।
যখন গড় সিস্টেমিক রক্তচাপ বেশি হয় তখন রেনাল অটোরেগুলেশন ঠিকমত কাজ করতে পারেনা এবং দ্রুত ফিলট্রেশন ঘটে।তখন পানির ঠিকমত পুনঃশোষণ না হওয়ায় মূত্রের পরিমাণ বেড়ে যায়।
©দীপা সিকদার জ্যোতি