মাথাব্যথার ধরন বুঝে নির্ণয় করা সম্ভব কেন ও কী কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। খুব পরিচিত দুটি কারণ হলো মাইগ্রেন আর টেনশন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই টেনশন টাইপ হেডেক। ১১ শতাংশের জন্য দায়ী মাইগ্রেন। ধূমপান, মদ্যপান, মাদকাসক্তি, অনিয়মিত ও অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন, রোদ বা অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া, অতিরিক্ত শারীরিক-মানসিক পরিশ্রম, ক্ষুধার্ত থাকা, মানসিক চাপ ইত্যাদি মাথাব্যথার কারণ। কাজেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সবার আগে এসব অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।
মাইগ্রেন
নারীরাই মাইগ্রেনে বেশি ভোগেন। সাধারণত ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স থেকে মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা দেয়। স্থায়ী হয় ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত। মাইগ্রেনে মাথাব্যথার লক্ষণগুলো হলো:
১. মাথার যেকোনো একপাশে ব্যথা হয়। একবার একপাশে ব্যথা হলে পরের বার অন্য পাশেও ব্যথা হতে পারে।
২. চার ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যথা স্থায়ী হতে পারে।
৩.মাথার দুই পাশের রক্তনালি বা রগ টনটন করছে বলে মনে হওয়া।
৪.ব্যথার তীব্রতায় কোনো কাজই ঠিকভাবে করা যায় না।
৫. আলো বা শব্দে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়।
৬.ব্যথার সঙ্গে বমিভাব বা বমি হতে পারে।
৭. ব্যথা শুরুর আগে চোখের সামনে আলোর নাচানাচি, আঁকাবাঁকা লাইন ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
৮. অন্ধকারে শুয়ে থাকলে ব্যথার তীব্রতা কমে।
টেনশন টাইপ হেডেক
মাথার মাংসপেশির সংকোচনের কারণে এ মাথাব্যথা হয়। এ ধরনের ব্যথার উপসর্গগুলো হলো:
মাথাজুড়ে ব্যথা হয়।
মাথা চেপে ধরে আছে—এমন অনুভূতি হওয়া।
মাইগ্রেনের মতো ততটা তীব্র ব্যথা হয় না।
এ ধরনের মাথাব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।
দুশ্চিন্তা, পারিবারিক বা পেশাগত কিংবা মানসিক চাপের সঙ্গে এই ব্যথার সম্পর্ক আছে।
কী করবেন :
মাথাব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল ইত্যাদি সেবন করা যেতে পারে। ব্যথানাশক ওষুধের সঙ্গে অবশ্যই পেপটিক আলসাররোধী ওষুধ খেতে হবে। অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবনেও মাথাব্যথা হতে পারে। এ সমস্যাকে বলে মেডিসিন ওভার ইউজ হেডেক। তাই খুব প্রয়োজন না হলে ঘন ঘন ব্যথানাশক ওষুধ না খাওয়াই ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শে দীর্ঘমেয়াদি কিছু ওষুধ সেবনে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।