দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কৃত্রিম লেক মিরসরাইয়ের মহামায়ায় বসেছে শামুকখোলের মেলা। বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত এই পাখি মহামায়া লেকের চারপাশের পাহাড়ে ও গাছের ডালে স্থায়ী আবাস গড়ে তুলেছে। এতে প্রকল্পের নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। পাখির আনাগোনা আকর্ষণ করছে প্রকল্পে ঘুরতে আসা মানুষকে।পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, শামুকখোলের অন্য নাম এশিয়ান ওপেন বিল। দেখতে বকের মতো, তবে ঠোঁট লম্বা ও ভারী। গায়ের রং ধূসর সাদা। পাখিটির দৈর্ঘ্য কমবেশি ৮১ সেন্টিমিটার। জলাশয়ে ঘুরে ঘুরে শামুক-ঝিনুক ধরে খায় এই পাখি।মহামায়া প্রকল্পে গিয়ে দেখা গেছে, লেকের উত্তর পাশে পাহাড়ের ওপর গাছের ডালে ডালে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে শামুকখোল পাখি। অল্প কিছু দূরত্বের দুটি গাছে ২৫-৩০টি শামুকখোলের দেখা মিলল। আশপাশের অন্য গাছগুলোতেও ছড়িয়ে-ছটিয়ে আছে আরো বেশ কিছু পাখি।স্থানীয় কয়েকজন ইঞ্জিনচালিত নৌকার মাঝি জানান, তিন বছর ধরে এখানে পাখিগুলো দেখা যাচ্ছে। সকালে এরা খাবারের খোঁজে উড়ে চলে যায় আবার বিকেল হতেই দলে দলে হ্রদে ফিরে আসে। মাছরাঙা, ডাহুক আর পানকৌড়িদের সাথে এই পাখিও পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।মহামায়া লেকে শামুকখোল পাখির এমন আবাসস্থল তৈরির বিষয়ে জানতে চাইলে এখানে বেড়াতে আসা চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সৈয়দ আরফানুল হক বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকায় শামুকখোল পাখি যখন বিপন্নপ্রায় তখন মহামায়ায় পাখিটির আবাসস্থল তৈরি বেশ খুশির খবর। এখানে এসে লেকের পাড়ের গাছে গাছে পাখির ওড়াউড়ি দেখে বেশ ভালো লাগল।বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, মহামায়া লেকে বিপন্নপ্রায় শামুকখোল পাখির বাসস্থান গড়ে ওঠার বিষয়টি আমরা জানি। শুধু শামুকখোল নয়, এখানে মাছরাঙা, পানকৌড়ি, ডাহুকসহ সব ধরনের পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল তৈরিতে নজর রাখা হচ্ছে। পদক্ষেপ হিসেবে প্রথমে এ এলাকায় পাখি শিকার নিষিদ্ধসহ লেকের পানিতে পাখির খাদ্য নিশ্চিত করতে বড়শি ছাড়া যে কোনো ধরনের জাল ফেলে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।