ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে তুরস্কে ৩ হাজার ৫৪৯ এবং সিরিয়ায় ১ হাজার ৬০২ জন। এখন বড় চ্যালেঞ্জ তীব্র ঠান্ডা, তুষারপাত ও বৃষ্টির মধ্যে সময়মতো উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাওয়া। কারণ, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা অসংখ্য মানুষ বাঁচার জন্য মরিয়া। তাঁরা আর্তচিৎকার করছেন।
এরই মধ্যে আজ মঙ্গলবার তুরস্কের মধ্যাঞ্চলে নতুন আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। তবে এতে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানা যায়নি। দেশটির এই দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ১০টি শহরে তিন মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের বিপর্যয়ে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আর মৃত মানুষের সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে।
তুরস্কের রেড ক্রিসেন্টের প্রধান বলেছেন, অন্তত সাড়ে পাঁচ হাজার ভবন ধসে পড়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েক হাজার ভবন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পে সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটি দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে চেষ্টা করছি। তুরস্কের রেড ক্রিসেন্ট ও স্থানীয় লোকজন সব মিলিয়ে আমরা ২ হাজার কর্মী, ২০০ যানবাহন নিয়ে কাজ করছি। মৌলিক মানবিক সহায়তাসামগ্রী নিয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাড়া দিতে প্রস্তুত আছি।’
তুরস্কের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুয়াত ওকতে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে তাঁদের দেশে ২০ হাজার ৫৩৪ জন আহত হয়েছেন। ধসে পড়েছে প্রায় ৬ হাজার ভবন।
২২ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে নারীকে জীবিত উদ্ধার
ভূমিকম্পের ২২ ঘণ্টা পর তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় সানলিউরফা প্রদেশে একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক নারীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু উদ্ধার অভিযানের একটি ভিডিও টুইটারে প্রকাশ করেছে। তারা ওই নারীর নাম-পরিচয় জানায়নি। বলা হয়েছে, স্থানীয় অধিবাসীদের সহায়তায় দেশটির জাতীয় উদ্ধারকারীরা এই নারীকে উদ্ধার করেছেন।
তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাতায়ে প্রদেশে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে ছিলেন দেনিজ। উদ্ধারকারীদের জন্য অপেক্ষা করতে করতে কাঁদছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তাঁকে উদ্ধার করা গেছে। রয়টার্সকে তিনি সেই অভিজ্ঞতা বলেছেন। দেনিজ বলেন, ‘(আটকে পড়া মানুষ) সবাই সাহায্যের আশায় শব্দ করছে, কিন্তু কেউ সেখানে যাচ্ছে না। আমরা বিধ্বস্ত হয়ে গেছি। সবাই সৃষ্টিকর্তাকে ডাকছে। তারা সবাই বাঁচতে চাইছে, কিন্তু তাদের বাঁচাতে পারছে না। সকাল থেকে সেখানে কেউ নেই।’
এদিকে সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের উদ্ধারকারী পরিষেবা সংস্থা হোয়াইট হেলমেটসের সদস্য রায়েদ আল-সালেহ বলেন, ‘ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য আমাদের সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দৌড়াতে হচ্ছে।’
ভূমিকম্পে দুই দেশে ধসে পড়েছে হাজার হাজার ঘরবাড়ি, যার মধ্যে অনেক বহুতল ভবন রয়েছে। এসব ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়াদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে। এরই মধ্যে তুরস্কে ২৪ হাজারের বেশি জরুরি কর্মকর্তা উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বেঁচে যাওয়া মানুষেরাও। তবে প্রচণ্ড বৈরী আবহাওয়ার এবং যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়ার কারণে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। সময়মতো বেঁচে থাকা মানুষের কাছে তাঁরা পৌঁছাতে পারছেন না। এ কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
ইস্তাবুল থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক সিনেম কোসেওগলো বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে। তিনি জানান, ভূমিকম্পের ফলে রানওয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গাজিয়ানতেপ, হাতায়, আদানা ও কাহরামানমারাস বিমানবন্দরে বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো আক্ষরিক অর্থে ভেঙে গেছে, ফাটল ধরেছে এবং মহাসড়কগুলোরও একই অবস্থা। বিশেষ করে হাতায় এবং গাজিয়ানতেপের মধ্যকার মহাসড়কগুলো।
এই নারী সাংবাদিক বলেন, এ কারণেই উদ্ধারকর্মীদের পক্ষে সেখানে পৌঁছানো এবং এসব এলাকায় মানবিক ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া কঠিন হয়ে উঠছে। কোসেওগলো জানান, মালতয়া এবং আদিয়ামান শহরে ‘ভারী তুষারপাত’ হয়েছে, যা এক সপ্তাহ অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সিরিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃত মানুষের সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। ডব্লিউএইচওর সিনিয়র ইমার্জেন্সি অফিসার ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা সব সময় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে একই জিনিস দেখতে পাই। দুর্ভাগ্যবশত শুরুর দিকে হতাহতের সংখ্যা যা থাকে, পরবর্তী সপ্তাহে উল্লেখযোগ্যভাবে তা বেড়ে যায়। তুষারপাত ও তীব্র ঠান্ডার মধ্যে অনেক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।’
এদিকে ডব্লিউএইচওর জ্যেষ্ঠ জরুরি কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাং বলেন, এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষ ক্ষতির শিকার হবে। যাদের মধ্যে ৫০ লাখ মানুষ আগে থেকেই নাজুক অবস্থায় ছিল। তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলজুড়ে বেসামরিক অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্য অবকাঠামো ভেঙে পড়েছে, বিশেষ করে তুরস্ক এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায়।’
ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্কের ওসমানিয়ে শহরের বেশির ভাগ মানুষ এখন খোলা আকাশের নিচে। সেখানে বৃষ্টি হচ্ছে। বেঁচে থাকা মানুষগুলো ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কিছুটা আগুন জ্বালিয়ে বসে আছেন। তাঁরা ঘরের যেটুকু অবশিষ্ট আছে, সেখানেও ফিরতে ভয় পাচ্ছেন; যদি আবার ভূমিকম্প হয়! ওসমানিয়ে শহরটির অবস্থান ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের কাছে। ওসমানিয়ে শহরের বেশির ভাগ রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাস্তার পিচ উঠে গেছে। সেতুগুলো ধসে পড়েছে।
ঘটনাস্থলে থাকা বিবিসির একজন প্রতিবেদকের সঙ্গে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কথা হয়েছে এক পরিবারের। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বসে ছিল পরিবারটি। পরিবারের সদস্যরা জানান, তাঁদের মনে হচ্ছে, প্রতিমুহূর্তে ভূমিকম্প হচ্ছে। তাঁরা তাই রাস্তার কাছে চলে এসেছেন। ওসমানিয়েতে বৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হচ্ছে।
তুরস্কে যাচ্ছে বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দল
তুরস্কে ভূমিকম্পের ঘটনায় উদ্ধারকাজে অংশ নিতে বাংলাদেশের ১০ সদস্যের একটি দল যাচ্ছে। এতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের পাঁচজন করে সদস্য থাকবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা আজ মঙ্গলবার দুপুরে এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিমানে (সি-১৩০) দলটি কাল বুধবার তুরস্ক যাবে। এই দলে কারা থাকবেন, কী কী সরঞ্জাম, উপকরণ ও চিকিৎসাসামগ্রী পাঠানো হবে, তা ঠিক করা নিয়ে কাজ চলছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, এর আগের ভূমিকম্পে তুরস্ককে উদ্ধারকারী দল পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তখন তারা বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিল, উদ্ধারকারী দল পাঠানোর দরকার নেই। এবার তারা প্রস্তাব পাওয়ার পরই আগ্রহ দেখায়।
জাতিসংঘের অফিস ফর দ্য কো-অর্ডিনেশন অব হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাসিসটেন্সের মুখপাত্র মাদেভি সান-সুওন রয়টার্সকে বলেন, তুরস্ক থেকে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়াযর দিকে জাতিসংঘের জরুরি সহায়তা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘কিছু রাস্তা ভাঙা, কিছু দুর্গম। সেখানে লজিস্টিক সমস্যা রয়েছে, যার সমাধান দরকার। এই সহায়তা কখন শুরু হবে, তার পরিষ্কার চিত্র আমাদের কাছে নেই।’
সিরিয়াকে সহায়তার ঘোষণা
ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত সিরিয়ায় প্রায় ১ কোটি ৩৬ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের মানবিক সহায়তা পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। বাংলাদেশি মুদ্রায় তা ১৪৫ কোটি ৪৬ লাখ ৪১ হাজার টাকার সমান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে তুরস্ককে সহায়তার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের আদানা বিমানবন্দরে একটি উড়োজাহাজ পাঠিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
উড়োজাহাজটিতে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল আছে। আছে চিকিৎসা সরঞ্জাম।
সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে, তারা তুরস্কে একটি ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে। এ ছাড়া তারা সিরিয়ায় অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠাবে। দেশটিতে তারা জরুরি ত্রাণ ও সহায়তা পাঠাবে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেছেন, সিরিয়ায় মানবিক সহায়তার জন্য মাল্টেসার ইন্টারন্যাশনাল এইড গ্রুপকে অতিরিক্ত মিলিয়ন ইউরো দেওয়া হবে। গতকালের ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন দেশ-সংস্থা তুরস্ক ও সিরিয়াকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে। তুরস্কে ইতিমধ্যে কেউ কেউ সহায়তামূলক কার্যক্রম শুরুও করে দিয়েছে।
তুরস্কের হুরিয়েত ডেইলি নিউজ জানিয়েছে, ভূমিকম্পে দেশটির ঐতিহাসিক গাজিয়ানতেপ দুর্গের দেয়াল ও সীমানাপ্রাচীর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু ধ্বংসাবশেষ রাস্তার ওপর ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। রোমান আমলে দুর্গটি পর্যবেক্ষণকাজে ব্যবহৃত হতো। ঐতিহাসিক দুর্গটি অনেকবার সংস্কার-পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।
গতকাল গাজিয়ানতেপ শহরের কাছেই প্রথম ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। আর বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সিরিয়ায়ও বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির প্রত্নতত্ত্ব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আলেপ্পোর ঐতিহাসিক একটি দুর্গের ভেতরের আইয়ুবিদ মসজিদের মিনারের গম্বুজের কিছু অংশ ধসে পড়েছে। দুর্গের প্রবেশদ্বারটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া দুর্গের উত্তর-পূর্ব দিকের প্রতিরক্ষাদেয়ালের কিছু অংশে ফাটল ধরেছে, কিছু অংশ ধসে পড়েছে।
আলেপ্পো শহরটি তার প্রাচীন দুর্গ, ইউনেসকোর তালিকাভুক্ত ঐতিহাসিক স্থান, শতাব্দী-পুরোনো ছাদ আচ্ছাদিত বাজারের জন্য বিখ্যাত।
তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্প কেন এত ভয়াবহ
তুরস্ক-সিরিয়ায় আঘাত হানা ভয়াবহ ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। এই মাত্রার কোনো ভূমিকম্পকে ‘গুরুতর’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়। ভূমিকম্পের ভয়াবহতার ক্ষেত্রে ফল্ট লাইনের বড় ভূমিকার কথা বলা হচ্ছে।
কোনো স্থানে ভূকম্পনের জন্য ফল্ট লাইনের বড় ভূমিকা রয়েছে। ভূত্বকের উপরিভাগের বিশাল খণ্ডকে টেকটোনিক ফল্ট বলা হয়। আর দুটি টেকটোনিক প্লেটের মাঝে থাকা ফাটলকে ফল্ট লাইন বলা হয়। ভূমিকম্প সাধারণত এই ফল্ট লাইনের আশপাশে হয়ে থাকে।
গতকালের ভূমিকম্পে তুরস্কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার ফল্ট লাইন ভেঙে গেছে। এ কারণেই সৃষ্ট ভূমিকম্পটি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই ফল্টের কাছাকাছি থাকা ভবনগুলো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের ইনস্টিটিউট ফর রিস্ক অ্যান্ড ডিজাস্টার রিডাকশনের প্রধান অধ্যাপক জোয়ানা ফউর ওয়াকার বলেন, ‘এ রকম প্রাণঘাতী ভূমিকম্প গত ১০ বছরে দুটি ও তার আগের ১০ বছরে চারটি হয়েছে।’
তবে শুধু কম্পনের কারণেই এই ক্ষয়ক্ষতি হয় না। দেশটিতে থাকা ভবনগুলো কতটা দৃঢ়, সে ব্যাপারটিও প্রভাব ফেলেছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছে ভোরে, তখন প্রায় সব মানুষই বাসায় এবং ঘুমে। এ কারণে ভবনধসে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা জানিয়েছে, গাজিয়ানতেপ এলাকাটির বেশির ভাগ ভবন শুধু ইট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে, যা খুবই ভঙ্গুর। এই নাজুক ভবন সেখানে বসবাসরত বাসিন্দাদের ভূমিকম্পের আঘাতে আরও ভঙ্গুর করে দিয়েছে।
যে এলাকায় ভূমিকম্পের উৎপত্তি, সেখানে ২০০ বছরের বেশি সময় আগে থেকে ভয়াবহ কোনো ভূমিকম্প হয়নি। কোনো সতর্ক সংকেতও ছিল না। এ কারণে এই অঞ্চলে ভূমিকম্প মোকাবিলা ও উদ্ধার অভিযানে ঘাটতি থেকে যাবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি, আল–জাজিরা, এএফপি, রয়টার্স