বিশ্বের আশ্চর্যতম যাদুঘর ও অবিকল মানুষরূপী মূর্তি সমন্ধে আশ্চর্য তথ্য জানুন।
বিশ্বের বৃহত্তম ও আশ্চর্যতম যাদুঘর লন্ডন শহরে মেরিলিবোর্ন রাজপথের মাদাম মাদাম মেরী তুঁসোর মোম যাদুঘর। বিশ্বের বিখ্যাত ও কুখ্যাত নর-নারীদের মূর্তি প্রদর্শনের জন্য রক্ষিত আছে। হল অব ফেম নামক বিশালায়তন একটি কক্ষে এদের আশ্চর্য ভঙ্গিমায় এক একটি মূর্তিকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ‘ট্যাবলোর ছাঁচে সাজানো’।
যেমন ধরা যাক- হিটলার, মুসোলিনি, কেনেডি, ক্রুশ্চেভসহ প্রভু কার নাম আমাদের জানা নেই? আরও আছে।
তাদের দাঁড়ানোর ভাবভঙ্গি, মুখের ভাব, পোশাক পরিচ্ছদ থেকে শুরু করে দৈহিক উচ্চতা পর্যন্ত সব দিক থেকেই সতর্ক দৃষ্টি রাখা হয়।
প্রথমবার চোখ বুলিয়ে দেখেই দর্শককে সচকিত হয়ে পরতে হয়। মনে হয় মূর্তি নয়, অবিকল সে ব্যক্তিটি বুঝি সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
আঠার শতকে তুঁসো নামক এক ফরাসী মহিলার মাথায় প্রথম পরিকল্পনাটি এসেছিল। শৈশবের দূরন্ত সেই দিনগুলো থেকেই মাটি, প্লাস্টার অব প্যারিস ও মোম দিয়ে মূর্তি তৈরি ছিল তাঁর নেশা। পরবর্তী কালে যখন সে বিবাহিত জীবনে পদার্পণ করেন, তখনও সে নেশা ছাড়তে পারেননি। সংসারের কাজের ফাঁকে বসে যেতেন মূর্তি তৈরি করতে। প্যারিস ও লন্ডনে তাঁর তৈরি মোমের পুতুলের প্রদর্শনী হলো। হাজার হাজার শিল্প রসিকে, ভূয়সী প্রশংসা করলেন। এতে তাঁর বংশধররা উৎসাহিত হয়ে একটি স্থায়ী সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হলেন।
বহু অর্থ ব্যয়ে লন্ডনের মেরিলিবোন ষ্ট্রীটে পরিকল্পিত সংগ্রহশালাটি প্রতিষ্ঠিত হল। মাদাম মেরী তুঁসোর বংশধর ও বিখ্যাত শিল্পী বার্নার্ড তুঁসো হলেন তার কার্যনির্বাহক। তিনি বৃদ্ধা মাদাম মেরী তুঁসোর মৃত্যুর পূর্বে তাঁর মুখের ছাঁচ তুলে রেখেছিলেন। তা থেকেই পরবর্তীতে তার মূর্তি গড়ে তোলা হয় এবং সেই মূর্তিটি সংগ্রহশালার প্রধান ফটকের সামনে স্থাপন করা হয়েছে।
এরকমই বিভিন্ন দিক থেকে বিখ্যাত ও কুখ্যাত প্রায় পঞ্চাশ জন ব্যক্তির মূর্তি গড়ে সেসময় সংগ্রহ শালায় রাখা হয়েছিল। বর্তমানে সে সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। এই মূর্তিগুলো সব মোমের তৈরি, রক্ত-মাংসের ব্যক্তি নয়; এটা বলে না দিলে বোঝার উপায় নেই।
তথ্য সংগ্রহেঃ মেহেজাবীন শারমিন প্রিয়া।