পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, দেশে বড় কোনো ঘটনা ঘটলে সবাইকে তা জানানো হয়। এটা স্বাভাবিক কূটনৈতিক প্রক্রিয়া।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কূটনীতিকদের জানিয়েছি। কারণ, তারা (বিএনপি) ১০ তারিখের পর থেকে নানা সময়ে বিভিন্ন দূতাবাসে গিয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে দেনদরবার করছে। বিএনপির দেনদরবার ঠেকাতেই তথ্যগুলো জানানো হয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে উইমেন জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (ডব্লিউজেএনবি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে গতকাল সোমবার বিদেশি মিশনগুলোয় সরকার চিঠি পাঠিয়েছিল। ওই চিঠির বিষয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের অনুষ্ঠানের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল।
শাহরিয়ার আলম বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কূটনীতিকদের ব্রিফিং করতে চায় না সরকার। তাই মিশনগুলোতে চিঠি পাঠিয়ে তথ্য জানিয়ে রাখা হয়েছে।
ঢাকায় সমাবেশ কেন্দ্র করে বিএনপি প্রোপাগান্ডা চালিয়েছে অভিযোগ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, কিছু বড় দেশ ৯ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেবে, এমনটা আগেই জানা ছিল। বিষয়টিকে মাথায় রেখে বিএনপি দেশে ও বিদেশে অপপ্রচার চালিয়েছে। তাই তারা ১০ ডিসেম্বরকে সমাবেশের জন্য বেছে নেয়। তারা মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে লবিস্টের পেছনে। তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) আশ্বাস পেয়েছিল, নতুন করে আরও নিষেধাজ্ঞা আসবে। সেটাকে মিলিয়ে ওই দিন তারা উদ্যাপনের আমেজে বিশাল জনসভা করবে। জনগণ মনে করবে, সরকারের সঙ্গে কোনো বন্ধু নেই। এই পুরো পরিকল্পনাটা তাদের ভেস্তে গেছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপি অতি উৎসাহী হয়ে ৭ তারিখ থেকে রাস্তায় নেমেছিল। রাজনীতি পিকনিক নয়। বিএনপির নৈতিক স্খলন হয়েছে বলেই সোহরাওয়ার্দীতে তারা সমাবেশ করেনি। কারণ, তারা এত লোক জমায়েত করতে পারবে না।
মিশনগুলোতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ৭ ডিসেম্বর দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা সড়ক অবরোধ করেন।
অবরোধের কারণে নয়াপল্টন এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় পুলিশ তাঁদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। কিন্তু বিএনপির বিক্ষোভকারীরা তা অগ্রাহ্য করে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপের পাশাপাশি যানবাহন ভাঙচুর শুরু করেন। তাঁদের হামলায় পুলিশের ৪৯ জন সদস্য আহত হন, এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর।
চিঠিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তারের কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
শাহরিয়ার আলম বলেন, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করতেই ডিবি অফিসে নেওয়া হয়েছিল তাঁদের। তাঁদের থেকে তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। সে কারণে তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।