সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো বর্তমানে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে যে আমাদের আবেগ ও কাউকে বিচার করার মানদন্ডও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কেন্দ্রিক হয়ে গেছে।একজনের প্রোফাইল দেখেই সেটাকে বাস্তব জীবনের মানুষটার আয়না মনে করে ফেলি আমরা।কেউ মজার কিছু শেয়ার করলে ধরে নেই বাস্তবে সে অনেক মজার মানুষ এবং গুরুতর কিছু শেয়ার করলেই ধরে নেই মানুষটা কাঠখট্টা টাইপের।এই মনে করে নেয়া বা ধরে নেয়া আসলে বিরাট একটি ভুল।তবুও আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এত বেশি ঝুঁকে পড়েছি যে তার ভিত্তিতেই আমরা মানুষের মাথার চুল থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত যাচাই করে ফেলি।
আরেকটি সমস্যাও বর্তমানে প্রকট হয়ে উঠেছে।অনলাইন গ্রুপগুলোর আড্ডায় আমরা এত বেশি অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে সেই আড্ডায় নিয়মিত থাকা কাউকে হঠাৎ করে না পেলে আমরা নিজেদের মনমত কাহিনী তৈরী করে নেই।বিশেষ করে একসাথে পড়াশোনা করা বন্ধুদের মধ্যে এই বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।আড্ডায় নিয়মিত থাকা কেউ হঠাৎ অনিয়মিত হয়ে পড়লে আমরা ভেবে নেই আমাদের সাথে সে আর মিশতে চায়না বা আমাদের এড়িয়ে চলতে চায়।ভেবে নেই হয়তো সে নতুন বন্ধু পেয়েছে।কিংবা ধরা হয় তার অনিয়মিত হওয়ার কারণ তার নতুন প্রেমিক/প্রেমিকা।অনেকে আবার মনে করে সবাইকে টক্কর দিতে সে এতবেশি পড়াশোনা করছে যে বন্ধুদের আড্ডায় আর যোগ দেয়না।এতে খুব সহজেই কাছের বন্ধুরাও তার প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।কিন্তু তারও ব্যক্তিগত জীবনে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে,অন্য কোনো ঝামেলার সমাধানে সে সাময়িক ব্যস্ত হয়ে উঠতে পারে এই বিষয়টি কারো মাথায় আসেনা।অর্থাৎ,বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই একজন মানুষের অনলাইন এক্টিভিটি দেখে তাকে বিচার করে ফেলছে।
আমাদের উচিৎ আমাদের এরূপ মানসিকতার পরিবর্তন ঘটানো।অনলাইন দুনিয়ার বাইরেও যে একটা দুনিয়া আছে এবং সেই দুনিয়াটাই যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা আমাদের বুঝতে হবে।তাহলেই অনেক ভুল সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে আমরা বিরত থাকতে পারব।
©দীপা সিকদার জ্যোতি