বাদুর কেন নিশাচর প্রাণী?
আমরা প্রায়ই দেখি, এক ধরনের প্রাণী পা দিয়ে গাছের ডাল আঁকড়ে ধরে মাথা নিচের দিকে দিয়ে সারাদিন নিশ্চল নিথর ভাবে ঝুলে রয়েছে। আর তারা পেঁচা, শিয়াল, বাঘ, হায়েনা প্রভৃতি প্রাণীদের মতো নিশাচর। দিনের চেয়ে রাত্রি অন্ধকারে এরা পেঁচার মতো ভালো দেখতে পায়। ফলে সারা রাত্রি এখানে ওখানে ঘুরে খাদ্যান্বেষণ করতে কোনই অসুবিধা হয় না। ফল এদের একমাত্র খাদ্য।
তবে বাদুড়ের যে ব্যাপারটি খুবই কৌতূহলের উদ্রেক করে তা হলো, তারা রাতের অন্ধকারে কি করে দেখতে পায়! তারও আগে জানা দরকার, আমরা কি করে কোন জিনিসকে দেখি। যে জিনিসটা আমরা দেখি তার ওপর আলো পড়লে তা প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে এসে পড়ে। অর্থাৎ চোখের লেন্সের মধ্য দিয়ে তারপর তা প্রতিফলিত হয়ে পিছনে পর্দার ওপর দিয়ে পড়ে। পিছনের পর্দাটি অক্ষিপট নামে পরিচিত।
যে জিনিসটি আমরা দেখতে পাই তা অক্ষিপট এর উপর উল্টো ভাবে পরিস্ফুত হয় এবার সে ছবি সেখান থেকে স্নায়ুবে পৌঁছায় মস্তিষ্কে। মস্তিষ্ক এবার উল্টো ছবিটিকে সোজা ভাবে তুলে ধরে। আর এরই ফলে জিনিসটিকে আমরা দেখতে পাই।
কিন্তু বাদুড়ের বেলায় অন্ধকারে কি করে দেখা সম্ভব হয়?
আসলে তাদের চোখে চারটি বিশেষ উপাদান যেমন- মানুষের চোখে লেন্স থেকে রেটিনার যে দূরত্ব বাদুড়ের চোখে সে দূরত্ব অনেক গুণ বেশি। তাই তাদের চোখের রেটিনার উপর ছবি অনেক বড় হয়ে প্রতিফলিত হয়।
মানুষের চোখে যে পেকটন অনুপস্থিত, তাদের চোখে তা বর্তমান। এর কাজ খুব দ্রুত লেন্সের ফোকাস ঠিক করে ফেলা। আর বাদুড়ের চোখে রেটিনা এক প্রচুর সংখ্যক বিশেষ ধরনের কোষ দিয়ে তৈরি। এরা কোণ এবং রড নামে পরিচিত।
বাদুড়ের চোখে এ কোষের সংখ্যা প্রতি বর্গ মিলিমিটারে ১০০০০ এর কাছাকাছি। মানুষের চেয়ে প্রায় ৫গুণ বেশি।
বাদুরের চোখে খুব সামান্য আলো বিকীর্ণ হয়ে এদের চোখের রেটিনার উপর প্রতিফলিত হয়। আবার বাদুড়ের চোখে প্রোটিন জাতীয় এক ধরনের লাল রঙের রাসায়নিক উপাদান এদের চোখে আলোর প্রতি বেশী সংবেদনশীল করতে সাহায্য করে।
উপরে উল্লেখিত কারণ গুলোর জন্য বাদুর রাত্রির অন্ধকারে পরিষ্কার দেখতে পায়
তথ্য সংগ্রহে- মেহজাবিন শারমিন প্রিয়া