বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ‘সোনালি অধ্যায়ে’র রেশ রেখেই তাদের তিন কোটি ডোজ় কোভিড প্রতিষেধক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মোদী সরকার। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ে এলোমেলো হয়ে গিয়েছে নয়াদিল্লির প্রতিষেধক-কূটনৈতিক। ফলে বকেয়া দু’কোটি ডোজ়ের জন্য এখনও অপেক্ষা করছে ঢাকা। তার মধ্যে প্রায় ১৫ লক্ষ মানুষ, ভারত থেকে পাওয়া প্রথম দফার টিকা নিয়ে বসে রয়েছেন। দ্বিতীয়টির সময় পেরিয়ে গিয়েছে তাঁদের। বাংলাদেশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই তীব্র সঙ্কটের মধ্যে বাংলাদেশের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে চিন। ঢাকায় পৌঁছেছে পাঁচ লক্ষ ডোজ় চিনা প্রতিষেধক। অদূর ভবিষ্যতেই ৪ কোটি ডোজ় টিকা ব্যবসায়িক চুক্তির মাধ্যমে ঢাকাকে দেবে বেজিং। পাশাপাশি কোভ্যাক্স ব্যবস্থার মাধ্যমে ফাইজ়ারের ১ লক্ষ ডোজ়ও এসে পৌঁছেছে ঢাকায়। সব মিলিয়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
ঢাকা সূত্রের বক্তব্য, “আমরা ভারতের বাধ্যবাধকতার দিকটি বুঝতে পারছি। কিন্তু আমাদের অবস্থাও ভারত বুঝবে এটাই আশা করা হয়েছিল। আমাদের বিদেশমন্ত্রী এবং বিদেশসচিব নয়াদিল্লির কাছে বকেয়া প্রতিষেধকের জন্য আবেদন করেছিলেন। বিভিন্ন স্তরে চেষ্টা হয়েছে। অথচ ভারতের সিরাম ইনস্টিটউটকে আমাদের তিন কোটি ডোজ়ের জন্য টাকা দেওয়া রয়েছে। যাঁরা একটি ডোজ় নিয়ে বসে রয়েছেন তাঁদের কী হবে?”
গোটা ঘটনায় বাংলাদেশ কিছুটা আশাহত তা স্পষ্ট। সূত্রের খবর, গোড়াতে ভারতের উপর ভরসা রেখেই চিনা প্রতিষেধকে না-করে দিয়েছিল শেখ হাসিনা সরকার। কিন্তু এখন উপায়ান্তর না-দেখে সেটাই নিতে হচ্ছে। চিনের কাছ থেকে সঙ্কটের সময় কোনও সুবিধা নিলে তার মূল্য কোনও না কোনও ভাবে দিতে হয়, এমনটাই দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক অভিজ্ঞতা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রাণ বাঁচানোর বিষয়টিই আপাতত প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের কাছে।
anandabazar