আমরা এনিমিয়া রোগের কথা শুনেছি।এ রোগে শরীরে রক্ত কমে গিয়ে শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যায়।কিন্তু এই রোগেরও বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ রয়েছে যা আমাদের অনেকেরই অজানা।আজ আমরা এনিমিয়ার আদ্যপান্ত জেনে নেব।
এনিমিয়া একটি অবস্থা যেখানে হিমোগ্লোবিন বা লোহিত রক্তকণিকা বা উভয়ের পরিমাণগত কিংবা গুণগত অনুপস্থিতির কারণে ব্যক্তির ত্বক, মিউকাস মেমব্রেন ফ্যাকাসে বর্ণের হয়ে যায়।
এনিমিয়ার বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ রয়েছে।প্রথমেই আসে মরফোলজিকাল বা অঙ্গসংস্থানগত শ্রেণীবিন্যাস।এর ভিত্তিতে তিন ধরনের এনিমিয়া সনাক্ত করা যায়:
*মাইক্রোসাইটিক হাইপোক্রোমিক এনিমিয়া যার মধ্যে আছে আয়রনের অভাবজনিত এনিমিয়া, থ্যালাসেমিয়া, সাইডেরোব্লাস্টিক এনিমিয়া এবং ক্রোনিক এনিমিয়া।
*নরমোসাইটিক নরমোক্রোমিক এনিমিয়া যার অন্তর্গত হলো এপ্লাস্টিক এনিমিয়া, হিমোলাইটিক এনিমিয়া।
*ম্যাক্রোসাইটিক এনিমিয়া যার ভেতরে আছে মেগালোব্লাস্টিক এনিমিয়া, পারনিসিয়াস এনিমিয়া ও ফোলেটের অভাবজনিত এনিমিয়া।
এনিমিয়ার আরেকটি শ্রেণীবিন্যাস হলো ইটিওলজিকাল এনিমিয়া।এর ভিত্তিতে এনিমিয়া তিন ধরনের- রক্তহ্রাস জনিত এনিমিয়া হিমোলাইটিক এনিমিয়া এবং ডিসহিমোপয়েটিক এনিমিয়া।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে বেশি হওয়া এনিমিয়াটি হলো আয়রনের অভাবজনিত এনিমিয়া।অর্থাৎ, মাইক্রোসাইটিক হাইপোক্রোমিক এনিমিয়া।এর কারণের মধ্যে আছে-
*প্রচুর রক্তহ্রাস
*ঘন ঘন গর্ভাবস্থা
*অপুষ্টি
*অপর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ
*নিম্ন অর্থনৈতিক অবস্থা
*অজ্ঞতা
*পাকস্থলীর ক্যান্সার (বৃদ্ধ বয়সে)
কোনো ব্যক্তি এনিমিয়াতে আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডাক্তারগণ ব্যক্তির শরীরের কিছু কিছু জায়গা লক্ষ্য করেন।যেমন:
-চোখের কংজাঙ্কটিভার নিচের অংশ
-জিহ্বার পৃষ্ঠদেশ
-মুখের মিউকাস মেমব্রেন
-আঙ্গুলের প্রান্ত,নখ
-হাতের তালুর ত্বক
-পায়ের পাতার ত্বক
-পুরো শরীরের ত্বক
অর্থাৎ, আমাদের লোহিত রক্তকণিকার হ্রাস ঘটলে এনিমিয়া দেখা দেয়।তাই সঠিক খাদ্যগ্রহণ ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে আমরা সহজেই এনিমিয়া প্রতিরোধ করতে পারি।কারণ রক্তশূন্যতার কারণে মানুষের মৃত্যু ঘটা কিন্তু অস্বাভাবিক নয়!
©দীপা সিকদার জ্যোতি