বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন ও সচেতনতা, বয়ঃসন্ধিকাল হলো মানুষের জীবনের এমন একটি ধাপ, যে সময়ে শিশু যৌবনে রুপান্তরিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। এ সময় তাদের জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সংঘটিত হয়। বয়ঃসন্ধিকালে শিশু থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার জন্য শরীরের সুপ্ত প্রতিভাগুলো বিকশিত হতে শুরু করে। তাদের মধ্যে প্রজনন ক্ষমতা এ সময় থেকেই তৈরী হয়।
বয়ঃসন্ধির সময়,শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন হয়,যার মধ্যে রয়েছে বৃদ্ধির গতি,শরীরের গঠনে পরিবর্তন, গৌণ যৌন বৈশিষ্ট্যের বিকাশ (যেমন মহিলাদের মধ্যে স্তনের বিকাশ এবং পুরুষদের মুখের চুলের বৃদ্ধি),এবং মহিলাদের মধ্যে ঋতুস্রাব শুরু হওয়া। টেস্টোস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন সহ হরমোনগুলি এই পরিবর্তনগুলিতে একটি মূল ভূমিকা পালন করে।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন ও সচেতনতা
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন ও সচেতনতা, বয়ঃসন্ধিকাল সাধারণত মেয়েদের ৮ থেকে ১৩ বছর বয়সের মধ্যে এবং ছেলেদের জন্য ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয়। তবে অনেকের বয়ঃসন্ধিকাল একটু দেরিতে হতে পারে। বয়ঃসন্ধির সময় এবং গতি ব্যক্তিদের মধ্যে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে এবং জেনেটিক্স,পুষ্টি এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যের মতো কারণগুলির দ্বারা প্রভাবিত হয়।
বয়ঃসন্ধিকাল কিছু কিশোর-কিশোরীদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং সময় হতে পারে, এটি বৃদ্ধি এবং আত্ম-আবিষ্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং উত্তেজনাপূর্ণ সময়। তাই এ সময়ে তারা যেন ভুল পথে না যায় সেজন্য সকল পিতামাতা, শিক্ষাবিদ এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সকলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন ও সচেতনতা, আর কিশোর-কিশোরীদের উচিত তাদের মাঝে নতুন অভিজ্ঞতা বাবা-মায়ের সঙ্গে শেয়ার করা এবং সমস্যার সমাধান করা।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন সমূহ
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন সমূহ, বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের শারীরিক,মানসিক ও সামাজিক বিভিন্ন প্রকার পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাদের শরীরে প্রজনন অঙ্গের বিকাশ ঘটে এবং যৌন হরমন নিঃসৃত হওয়া শুরু হয়। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন ও সচেতনতা, এ সময় মেয়েদের শরীরে ইস্ট্রোজেন এবং ছেলেদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের প্রভাবে নানাবিধ পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন, একটা নির্দিষ্ট সময়ে ছেলে কিংবা মেয়েদের বেশ কিছু শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় আর এই ধারনা থেকেই বোঝা যায় উক্ত ছেলে কিংবা মেয়েটির বয়ঃসন্ধি চলছে। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন ও সচেতনতা, উক্ত সময়ে ছেলে-মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন সমূহ আলাদা আলাদা হয়ে থাকে।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেদের যেসব পরিবর্তন হয়
গলার স্বর ভারী ভারী হয়,
পেশি সমূহ শক্ত এবং গঠনগত পরিবর্তন হওয়া শুরু হয়,
বুক ও কাধ চওড়া হতে থাকে,
দেহের দ্রুত উচ্চতা ও ওজন বৃদ্ধি পায়,
মখে দাড়ি,গোফ এমনকি বুকে ও বিশেষ অংশে লোম গজানো শুরু হয়,
ঘুমের মধ্যে মাঝে মাঝে বীর্যপাত (স্বপ্নদোষ) হতে পারে।
বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের পরিবর্তন সমূহ
বয়ঃসন্ধি সময়ে মেয়েদের প্রথম দৈহিক বিকাশ শুরু হবে তার স্তনে,তাদের স্তন ক্রমে ক্রমে বড় হওয়া শুরু হবে,
দৈহিক উচ্চতা বাড়বে,
শরীরের বিভিন্ন অংশে লোম গজাবে,
তাদের নিতম্ব, উরু,পেট স্থুলকার আকার ধারন করবে,
নিয়মিত ঋতুস্রাব বা মাসিক শুরু হবে,
মুখে ব্রন বা ফুসকুড়ি হতে পারে।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের মানসিক পরিবর্তন
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের বেশ কিছু মানসিক পরিবর্তন হয়ে থাকে ,যা চোখে পরার মত। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন ও সচেতনতা, মানসিক পরিবর্তন গুলো ছেলে-মেয়েদের একই রকম হয়ে থাকে। এই পরিবর্তনের ফলে অনেক সময় অনেকে খারাপ পথে পরিচালিত হতে পারে তাই, প্রত্যেক বাবা-মাকে সতর্ক থাকতে হবে।
বয়ঃসন্ধি সময়ে ছেলে-মেয়েদের যেসব মানসিক পরিবর্তন ঘটে
আবেগপ্রবণ হয়ে উঠে,
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়,
নিজের প্রতি অন্যের আগ্রহ বাড়ানোর চেষ্টা করে,
হঠাৎ উৎফুল্ল বা আনমনা থাকা,
নিজের প্রতি আত্বনির্ভরশীল হওয়া,
মানসিক অবস্থা দ্রুত উঠানামা করা এবং পরিপক্কতা লাভ করতে শুরু করা,
একঘেয়েমি আচরণ করা।
নতুন বিষয়ের প্রতি অতি উৎসাহী হওয়া।
বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের সামাজিক পরিবর্তন
বয়ঃসান্ধিকালীন সময়ে ছেলে-মেয়েদের মানসিক ও আরচরণগত দিক থেকে পরিবর্তনের কারণে সমাজে তাদের বিভিন্ন রকম প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, যা দেখে সবাই ধারণা করতে পারে তাদের বয়ঃসন্ধি শুরু হয়েছে কিনা।
যেমন,
পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে আড়াল হতে চায়,
বন্ধু-বান্ধবদের সহিত বেশি সময় দিতে পছন্দ করে,
বিভিন্ন সামাজিক কাজে যোগদান করে,
একা একা থাকতে পছন্দ করে।
সব সময় কিছু লুকোনোর চেষ্টা করা।
বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে পিতা-মাতার দ্বায়িত্ব
বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে পিতা-মাতার দ্বায়িত্ব, বয়ঃসন্ধি সময়ে প্রত্যেক ছেলে-মেয়েই তাদের সিদ্ধান্তকে সবসময় প্রাধান্য দিয়ে থাকে, তারা তাদের সমস্যাগুলো বাবা-মায়ের সহিত শেয়ার না করে সমবয়সীদের সহিত শেয়ার করে। এতে তারা অনেকসময় বিপথগামী হয়ে যায়। বয়ঃসন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের পরিবর্তন ও সচেতনতা, তারা ভুল পথে পা বাড়ায়। তাই উক্ত সময়ে বাবা-মায়ের উচিত তাদেরকে অবহেলা না করে তাদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং তাদেরকে সঠিক পথে নিয়ে আসা।