শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ভর করেছে। আর আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা ভালো–মন্দনির্বিশেষে হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দেওয়ায় বাজারে বড় ধরনের দরপতন চলছে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আজ সোমবার পৌনে ৩ শতাংশ বা ১৮২ পয়েন্ট কমে নেমে এসেছে সাড়ে ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে।
সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এক দিনে সূচকের এমন পতন হয়নি। বড় এ পতনে ডিএসইএক্স সূচকটি সাড়ে ছয় হাজারের মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে নেমে যাওয়ায় আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
শেয়ারবাজারে আজ সোমবার দরপতন এতটাই ভয়াবহ ছিল যে দিন শেষে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র সাতটির দাম বেড়েছে। আর দাম কমেছে ৩৬৪টির বা ৯৬ শতাংশের দাম। সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে এক দিনে সূচকের এমন পতন হয়নি। বড় এ পতনে ডিএসইএক্স সূচকটি সাড়ে ছয় হাজারের মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে নেমে যাওয়ায় আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ফলে এদিন পতনের ধাক্কা সামাল দিতে না পেরে অনেকে লোকসানে শেয়ার বিক্রি করে নিজের পোর্টফোলিও বা পত্রকোষ খালি করে ফেলেছেন।
শেয়ারবাজার
এদিকে ডিএসইর তথ্য বলছে, এ বাজারের প্রধান সূচকটি আবারও সাত মাস আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই এ সূচক ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্টের সর্বনিম্ন অবস্থানে ছিল। আজ দিন শেষে এ সূচক কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৪৫৬ পয়েন্টে। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে সূচক কমতে শুরু করে। এরপর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর থেকে সূচকের এ পতন আরও ত্বরান্বিত হয়। সঙ্গে লেনদেনও আশঙ্কাজনকভাবে কমে যায়। ১৫ ফেব্রুয়ারিও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ২০০ কোটি টাকার ওপরে। সেটি কমে এখন নেমে এসেছে সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার ঘরে। যদিও আজ দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৭৩৪ কোটি টাকা।বাজারসংশ্লিষ্ট একাধিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী ও বেশ কয়েক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ দিনের শুরু থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যেই শেয়ার বিক্রির প্রবণতা ছিল সবচেয়ে বেশি।
তবে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেছেন, বেশ কিছু ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে গত কয়েক দিনে ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ফোর্সড সেল বা জোরপূর্বক বিক্রি করা হয়। এর আগে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ সমন্বয়ের চিঠি দেয় বিনিয়োগকারীদের। কিন্তু পড়তি বাজারে ঋণ সমন্বয়ে ব্যর্থ হন অনেকে। ফলে তাঁদের কিছু বিনিয়োগকারীর শেয়ার ফোর্সড সেলের আওতায় পড়ে। আবার কেউ কেউ ফোর্সড সেলের ভয়ে নিজেরাই শেয়ার বিক্রি করে দেন। এমনও অভিযোগ পাওয়া গেছে, কিছু ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে চুপচাপ বসে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই পরামর্শ শুনে অনেক সাধারণ বিনিয়োগকারীও লোকসান কমাতে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।